তিনি এখন স্বর্গবাসী !!!
কবি তপন সৎপথী (নিরক্ষর) ১২ মার্চ, ১৯৭৩ সালে বাঁকুড়া জেলার ভূতসহর নামক বর্ধিষ্ণু গ্রামে  জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মদন মোহন সৎপথী ( শিক্ষক) মা বকুল সৎপথী। কর্ম সূত্রে দীর্ঘ দিন বিহারের পাটনা ও ছাপরা তে কাটিয়ে সবশেষে গ্রামীণ চিকিৎসক হিসেবে তার জেলা শহরের নিকট বসবাস করেছন এবং নিয়মিত কাব্য চর্চা করে গেছেন ।
কবি হিসেবে তার আত্ম প্রকাশ খুব অল্প দিনের। স্কুল কলেজ জীবনে কিছু লেখা তিনি লিখেছিলেন যেগুলো অনেকটাই অপ্রকাশিত রয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০১৬ সাল তিনি কাজের অবসরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুনরায় লেখা শুরু করেন। শুরুর দিকে ছন্দ কবিতার পাশাপাশি কিছু গদ্য কবিতাও তিনি রচনা করেন। কবিতার আসল রূপকে সকলের সামনে তুলে ধরার প্রয়াসে তিনি নিয়মিত কবিতা চর্চা ও প্রকাশ করতে থাকেন। দারুন উৎসাহ ও উদ্দিপনায় তিনি কবিতা লেখার পাশাপাশি সনেট লেখা শুরু করেছিলেন, এ পর্যন্ত তার সনেট কবিতার সংখ্যা একশত ছাড়িয়ে গেছে। তার লেখা অনেক কবিতা এপার ওপার দুইবাংলার বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থেও প্রকাশিত হয়েছে।
অতি সুখের ও গর্বের বিষয় প্রায় দুইশত কবিতা নিয়ে ২০১৭ সালে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘‘কাব্যকথা’’ এবং প্রায় একশত কবিতা নিয়ে ২০১৮ সালে কবির দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ “আবহমান’’ প্রকাশিত হয় । পরবর্তীতে  সনেট নিয়ে কবির আরও একটি গ্রন্থ প্রকাশ করার ইচ্ছা ছিলো।
কবি ছোটবেলা থেকেই একটু বাউন্ডুলে প্রকৃতির। জগত সংসারের কোনো নিয়মই তার ইচ্ছেশক্তিকে বাধ সাধতে পারেনি, আবার নিয়মের বাইরেও সেভাবে নিজেকে প্রবাহিত হতে দেননি। তিনি মুক্তি ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তার প্রায় প্রতিটি লেখায় তিনি মানবাত্মার মুক্তির প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তার লেখার মাধ্যমে তিনি মানুষকে আত্মসচেতন এবং কর্মের মাধ্যমে পূন্য অর্জনের আহবান করেছেন। তার কবিতার অমৃতবাণীতে মুগ্ধ দেশ ও বিদেশের হাজার হাজার পাঠক। তিনি একজন সত্যিকারের কলম যোদ্ধা ও মানব প্রেমিক।
আমরা সকলে কবির সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করি । তাঁর রচিত কবিতার মধ্য দিয়ে পরিবর্তণ হোক এই ঘুণে ধরা সমাজের এবং মানুষ জেগে উঠুক সত্যিকারের মানবিক আদর্শে । অসুস্থ মানব সেবার মধ্যে যেমন তিনি জীবনের চরম সুখ ও শান্তি খুঁজে নিয়েছেন তেমনি সাহিত্যকেও তিনি কর্মে, ধর্মে ও সাধনায় একাত্ম করে নিয়েছেন।
২০১৮ সালের ১৩ আগষ্ট এক সড়ক দুর্ঘটনায় কবি আহত হয়ে দুর্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ২ অক্টোবর ২০১৮ হারিয়ে যান সকলের চোখের আড়ালে।