জানি এখন চিনবে না আর তুমি
আমি তোমায় চিনি সেদিন থেকে
যেদিন তুমি গাঁয়ের পথটি ভুলে
আপন ভেবেই শুধিয়েছিলে ডেকে॥
সেদিন ছিল ঝরা শ্রাবণ মাস
কালো মেঘে সূর্য ছিল ঢাকা
মাঠের আলে পা পিছলে তুমি
চলছিলে পথ একলা আঁকাবাঁকা॥
আমি ছিলাম পুবের মাঠের ধারে
ডাকলে তুমি হাতের ইশারায়
বিকেল আভা বর্ষা মেঘের সাথে
বললে আমায় যাবে দূরের গাঁয় ॥
অনেকটা পথ অনেক কিছু কথা
নাম শুধিয়ে বললে আদর করে
সেদিন থেকে রোজই শুনি পথে
ডাকছো যেন আজও কোথাও দূরে ॥
হয়তো আজও ভুলেছ চলার পথ
কিংবা আঁধার আসছে পিছে পিছে
নাহয় এমন বৃষ্টি ভেজা আলে
পা পিছলে পড়ছো আলের নীচে ॥
সেদিন থেকে খুঁজি নিজের মত
দৃষ্টি হারায় মাঠের পথে দূরে
প্রভাত আলো বেলায় মিশে যায়
নিত্য সকল চলে আপন করে ॥
এমনি হবে সেদিন সাঁঝের বেলা
কে যেন যে বললে আমায় এসে
আমার গাঁয়ে বামুন পাড়ার কাছে
বসবে আসর আজকে সন্ধ্যা শেষে ॥
গেলাম রাতে শুনতে তারই গান
জ্যোৎস্না রাতে আমার গাঁয়ের ধারে
গিয়েই দেখি এই তো আমার তুমি
পথ হারিয়ে যে ছিলে পথ পরে ॥
সারা শরীর ভূষণ ঝলমল
বক্ষ মাঝে দুলছে বাঁধন হারা
নাভি ছুঁয়ে অমূল্য এক লতা
কোমর জুড়ে উদাস পাগল পারা ॥
লাজ করিনি গেলাম খুবেই কাছে
হাত ইশারায় ডাকলাম পাস হতে
অনেক খানি কানের কাছে গিয়ে
শুধাই তারে, ' ডাকলে না আজ সাথে '॥
চমকে উঠে খানিক দূরে সরে
রইলে তুমি চেয়ে আমার পানে
জ্যোৎস্না আলো বিলীন হলো মেঘে
মন হারালো আমারই আনমনে ॥
রাত্রি তখন অনেক আঁধার শেষ
শান্ত ভোরে উঠান পাশে এসে
বললে শেষে সেদিনের সেই ঋণ
যৎসামান্য দিলাম ভালোবেসে ॥
পথ ফুরাল ভোরের আভা ছুঁয়ে
নীরব হোল তোমার পানে চেয়ে
সকল স্মৃতি জাগল সজল চোখে
হয়তো কিছু ঝরল অধর বেয়ে ॥
............. 15 . 7 . 2017 .............
নিরক্ষর ।


তপন সৎপথী (নিরক্ষর) ২০১৬-২০১৮ পর্যন্ত ফেসবুকে কবিতা লিখে সকলের কাছে তার অমূল্য প্রতিভা প্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁর লেখা কবিতা নিয়ে দুটি কাব্যগ্রন্থ “কাব্যকথা” ও “আবহমান” পাঠকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তিনি ছন্দ কবিতার পাশাপাশি অনেক সনেটও লিখেছিলেন যা পরবর্তীতে বই আকারে প্রকাশ করার তাঁর পরিকল্পনাও ছিলো,  (প্রকাশিত হবে)।
বাংলা কবিতা ওয়েবসাইটে যার সাহায্যে তিনি একাউন্ট খোলেছেন, কবির রেখে যাওয়া  একান্ত ইচ্ছাটাকে সম্মান করেই কবির চলে যাবার পর থেকে তার কবিতাগুলো তিনি আড়ালে থেকে প্রকাশ করে যাচ্ছেন।  
সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি কবি অসুস্থ্য মানুষের সেবা করে গেছেন নিষ্ঠা ভালোবাসা ও দরদের সাথে।
আসুন,  আমরা কবির সৃষ্টিগুলোকে বাঁচিয়ে রেখে, তাঁর  প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করি।