ব্যক্তি তুমি কতখানি সম্মোহনী শক্তি নিয়ে জন্মেছিলে
তা জানিনা
তবে এ হৃদয়ের
পরতে পরতে
রন্ধ্রে রন্ধ্রে
যে সমস্ত শব্দাবলী ঝংকারের মত বেজে ওঠে
শূন্যে গিয়ে যখন বিধাতার কাছে
পৌঁছে যাই
ততই যেন বিহ্বল হয়ে মশগুল হয়ে যাই
তোমার ব্যক্ত প্রতিটি শব্দ , প্রতিটি পঙক্তিমালা , প্রতিটি ছন্দে
যে নিদারুণ যন্ত্রণা
যে গভীর ভালবাসা
যে আত্মত্যাগ
যে মমতা
যে প্রকৃতি প্রেম
তোমার প্রতিটি অনুভূত কষ্ট
শুধুমাত্র স্পর্শ ই করে না
বরং
হৃদয়ের গভীর কুঠরিতে যে সমস্ত আবেগ
তালা বদ্ধ থেকে গিয়েছে আজীবন
সেই তালা ভেঙ্গে চুরমার করে
কোনও এক গহীন থেকে যেন
আর্ত স্বরের কোনও চিৎকার ভেসে
এসে জানান দেয় কোনও কোনও
বেমানান ক্ষত
দগ্ধ - বিচূর্ণ - অবিন্যস্ত - রক্তাক্ত - হিংস্র
কোনও সুপ্ত
অধ্যায়
জীবনানন্দ ,
তোমাকে কি বলে বোঝাবো আমি
যে চিরন্তন প্রেমে ডুবে
ভাসমান থেকে বিস্তীর্ণ কোনও আকাশে
যেভাবে উড়ে গেলে তুমি
আমিও যেন সেই পথেই হেঁটে চলেছি
কোন আবেগের মায়াজালে
আঁষ্টে-পৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে গিয়েছে আমার
সমস্ত টা স্বতন্ত্রা
যে প্রকাশিত কিংবা অপ্রকাশিত
কবিতার কবর বিছিয়ে রেখে গিয়েছ তুমি
ধরণীর ঘাস ফুলে
পূর্ণিমার চাঁদের কলংকে
ধানসিড়ি নদীর তীরে
নির্ঘুম পেঁচার অনিদ্রায়
শালিকের কণ্ঠে লালিত সুরে
ঊর্ধ্বে হাওয়ায় মিশে
গোধূলি-লগ্নে কোনও বক-শালিকের তন্দ্রা বেশে
তার প্রতিটি ছন্দ যেন এ হৃদয়কে
চিচ্চিড় করে
এক সহজ উন্মাদ নায় মত্ত করে ফেলেছে
খুব অনায়াসে ই
জীবনানন্দ,
ব্যক্তি জীবনে কাউকে সম্মোহন করতে
পারো আর নাই পারো
কবিতার জগতে
যে নির্দ্বিধায়
এ প্রাণ কে উড়ন্ত মৃত্যুর পানে
আহ্বান জানাতে পেরেছ
সহজ সত্যকে সাবলীল ভাবে
হৃদয় কুঁড়ে কুঁড়ে
বেদনায় ভাসাতে পেরেছ
সার্থক তুমি!
তা আজ এই চিঠির পাতায়
খুব ছোট্ট আনাড়ি হাতের ছন্দে
লিখে রেখে গেলাম


২৫ শে ফেব্রুয়ারী ২০১৬
রাত ৯ : ৩৫