হে শিক্ষা,
চাইনি তো তোমার কাছে কখনো জ্ঞানের ভিক্ষা;
ছিলো তোমার সাথে মিত্রতা করার বড়ই আকাঙ্ক্ষা;
কিন্তু যখন তুমিই চাও না আমায়, তাই আমিও চাই না তোমার কাছে আর কোনো প্রকার ব্যাখ্যা।


ও শিক্ষা,
ভেবেছিলাম তোমায় ধীরে ধীরে মস্তিষ্কে করবো জড়ো;
তোমার হাত ধরে জীবনে হবো মস্ত বড়;
মনে মনে তোমার একটি কথাই ভাবতাম, “ আমার সহোদরগুলোকে(পুস্তক) ভালোভাবে পড়”;
“তোমার জীবন ভালোভাবে গড়”।


তাই,
তোমাকে পাওয়ার জন্যে ছুটেছি পথে প্রান্তরে;
অর্থ নিয়ে চিন্তা করিনি কখনোও গহিন অন্তরে;
ছুটেছি তোমার সন্ধান লাভের জন্য পণ্ডিত মশাইদের তথাকথিত সেই ‘কোচিং সেন্টারে’;
পরিশেষে ফলাফল শূন্য হলো আমার জ্ঞানের ভাণ্ডারে।


শুধু তোমাকেই পাওয়ার জন্যে গৃহেও এনেছিলাম সুবিদিত পণ্ডিত মশাইদের;
আমাকে তোমার সান্নিধ্য লাভের জন্যে তাদের অবস্থাও হয়েছিল ঘাম ঝরানো কসাইদের;
তারা প্রত্যেকেই বলতো,“ তোমাকে পড়িয়ে আমি স্বীকার হয়েছি বিপদের”;
আমি মূক হয়ে শুধু শুনেই যেতাম তাহাদের।



পরিক্ষার হলে যখনই আমাকে দেওয়া হতো প্রশ্ন আর খাতা;
আমি খুঁজতে লাগতাম ভালো কয়েকজন ভ্রাতা;
পরের ধন হনন করে আপন খাতায় লিখে দিতাম যা তা;
পরিশেষে মার্জিত ফলাফলই দিতেন বিধাতা।


ফলাফল দেখে মা-বাবা আর শিক্ষকরা হতেন সাময়িক খুশি;
তাদের মুখে ফুট্‌ত একটুখানি হাসি;
কটা দিন গেলে, আমার অবস্থা দেখে তারা পাড়ত আবারো সেই পুরনো দিনের কাশি;
বাজানো শুরু হয়ে যেত আবারো সেই বকাবকির বাঁশি।


ভেবেছিলাম করে ফেলবো এই শিক্ষা জীবনের হত্যা;
শুরু করবো নতুন এক জীবনের যাত্রা;
কিন্তু যখনই দেখি মা-বাবার সেই সীমারেখার মাত্রা;
মধ্যমাঠে দাঁড়িয়ে কেঁদে উঠে আমার এই জীবাত্মা।


তবুও ধন্যবাদ জানাচ্ছি তোমায়;
দিয়েছো অক্ষর-জ্ঞান তুমি আমায়;
আমার মা-বাবা তো আছেন আমাকে নিয়ে বড় আসায়;
কিন্তু আমি যে ভুগছি তোমাকে নিয়ে হতাশায়।


তাই বিদায় জানাচ্ছি তোমায়;
সব কিছু স্রস্টার উপর ছেড়ে দিয়ে আমি উঠে পড়লাম ভাগ্যের ভেলায়;
এবার স্রষ্টা আমাকে যেদিকে চালায়;
আমিও তা মেনে নিব যতই আসুক অন্তরায়।