ছিলাম ঘরে মায়ের ক্রোড়ে,
জেগে উঠি যাত্রা তরে।
চলতে শুরু তরী বেয়ে,
চলছে তরী আমায় নিয়ে।
বেগ যে তারই দুরন্ত,
চলবে বুঝি অনন্ত।


ভোরটা ছিল বেজায় ভালো,
যেদিক তাকাই রবির আলো।
পথের পানে ফুল ছড়ানো,
সবই দেখি রং মাখানো।
যেতে হবে অনেক দূর,
পাড়ি দিয়ে সমুদ্দুর।


অনেক সময় পেরিয়ে গেল,
আমার তরী কোথায় এলো।
সামনে দেখি বেজায় কালো,
আকাশ পানে কি ওগুলো?
পথ হারিয়ে গেলাম হায়!
হবে এখন কি উপায়?


আকাশটা যে মেঘে ঢাকা,
তারই মাঝে আমি একা।
ঢেউ গুলো সব করছে খেলা,
ঘনিয়ে এল সাঁঝের বেলা।
চার দিক মোর অন্ধকার,
ঝড় উঠেছে ভয়ংকর।


চলছে তরী হেলে দুলে,
সাগরের বুক উঠেছে ফুলে।
পাল গুটিয়ে নিচ্ছি ওরে,
হাল ধরেছি শক্ত করে।
বিজলি চমকে দিচ্ছে হাঁক,
গুরুমগুরম মেঘের ডাক।

যাচ্ছে তরী ভেসে-ভেসে,
কেউ নেই মোর আশেপাশে।
এদিক ওদিক ঘুরে তাকাই,
পথে যদি কারও দেখা পাই।
ভয়ে কাঁপে এ অন্তর,
কেউ নেই যে দিগন্তর।


একই পথে দেখি আবার,
সুখ দুঃখেরা বেঁধেছে ঘর।
পেছন ফিরে আসবো বলে,
স্বপ্ন দেখি চক্ষু খুলে।
কেমনে বলো ফিরে যাই,
ফেরার তো আর সময় নাই।


সুখ দুঃখেরা নদীর কূলে,
জাল বুনছে দু'জন মিলে।
হায়রে তরী ফেঁসে গেলে,
ওদের বোনা নিখুঁত জালে।
পড়ল শেকল আমার পায়,
এখন আমি নিরুপায়।


এরই মাঝে ভ্রম এসে যায়,
স্বপ্নচারী চোখের পাতায়।
সুখের ছোঁয়ায় যাই হারিয়ে,
ভোলা নাচে কটি দুলিয়ে।
রঙের মেলায় গেল মন,
কত বিশাল আয়োজন।


তুফান চোটে ভ্রম ভেঙ্গে যায়,
ভয়ে কাঁপে অবোধ হৃদয়।
ঝড় থামিলে খানিক পরে,
ভিড়বে তরী বালু চরে‌।
পথের বুঝি হবে শেষ,
ফিরবো তখন নিজের দেশ।