-তোমায় একটা কথা বলতে ফোন করেছি ফুফু।
-বেশতো, বলে ফেলো।
-কালকের দাওয়াতে ঠিক সময় মতো চলে আসবে কিন্তু!
একদম ঘড়ি ধরে কাঁটায় কাঁটায়।
-আচ্ছা, জানোইতো নিজের গাড়ী নেই,
অনেক বলে কয়ে , তা সে যাকগে,
-আর ঘুনাক্ষরেও দাওয়াতে এসে জানাবে না যে
তুমি আমার খালা শ্বাশুড়ী , বুঝেছো ?
-না, মাথাটা টিউব লাইটের মত জ্বলে জ্বলে নিবে গেলো বার কয়েক।  
কেন একথা বলছো?
-আহাহা , কাজিন স্বামী-স্ত্রী , ঠিক আঁচ নিতে পারেনা অনেকে,
বুঝবে না সেখানে কথার মানে?
-আমার মাথায় যতগাছা চুল,
ঠিক তত বছর তোমার পরমায়ু হোক বাছা !
তা দাওয়াতের মেনু কি?
-মাত্র রান্নার জোগাড় শুরু করলাম ,
আমি আবার একটু আগে থেকে
গুছিয়ে না নিলে ঠিক পারিনা।
-আমার কি পছন্দ জিজ্ঞেস করলেনা?
-সে তো মোটামুটি জানা কথাই,
এতে আর এতো জিজ্ঞেস করবার কি আছে?
-না না , এতেই তো রহস্যের শুরু।
গত শুক্রবার পর্যন্ত যাকে খাস্তা তেলে ভাজা মনে হতো
তাকে একটা নতুন নাম দিতে শিখেছি আজকাল।  
স্থানীয়সূত্রে সে খাদ্য প্রায় কিংবদন্তির পর্যায়ে মনে হয়।
-তাই নাকি? তা সে কি রকম ?
তা সে বেশ বেলে রাখা রুটির মতনই , তবে বেশ খেতে কিন্তু !
-আহ! জিজ্ঞেস করছি যে নামটা কি ছিল?
-বলছি। দাঁড়াও, নামটা ঠিক রপ্ত হয়নি,
ওটা বেশ করে শিখে এসে
তোমায় বলবো খন, কেমন?
-আচ্ছা , সে ঠিক আছে।  
আমার অনুরোধটা মনে আছে ?
বেশ করে মনে রেখো, ভুলে যাবেনা, একদম!
-না , এ আর এমন কি !


স্থানে স্থানে কি যে পড়ছি,
সকাল বিকেল ভুলতে থাকি,
ভুলতে থাকি জন্মভূমি,
বাড়ন্ত যৌবনের সকল দুর্দান্ত প্রতিশোধ
নেবার মত অসম্ভব প্রতিশ্রুতিশীল সম্ভাবনাময় সময়,
চলে যেতে দেয়া , কেবলই চলে যেতে দেয়া,
একমুখী প্রবহমান সত্যের অমোঘ, অবিচল দৌরাত্ম্যে , সেখানেও তো, না?


আরও কয়েকটা সুতোর গাছ এর সাথে না হয় ছিঁড়লামই ,
একটা জীবনের পাকাপোক্ত হয়ে ওঠাতে কি আর এমন!


উৎসর্গ : নুহা রুদাইনা রহমান এবং নাদিয়া লুৎফুল