অনুভূতির পূর্বকথা:


দেয়ালটার রংটা চোখে বড় বেশী
পড়ে যায় আজকাল।
বিবর্ণ দেয়ালের চেহারা,
পলেস্তারা খসে পড়া জায়গায় জায়গায়।
জীবনের মতোই ফ্যাকাশে ,
জীবনের মতোই খাপছাড়া।
বইগুলোতে পৃথিবী পাল্টে দেবার
স্বপ্ন নিয়ে ক্লাস শেষে এ ঘরে ফিরে
রং ওঠা দেয়ালের দিকে তাকিয়ে কেবলই
মনে হতে থাকে, পারবো তো?
পরাজিত মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে নেহাৎ কম নয়,
পরাজয়ের কারণও থাকে ভুরিভুরি।


বার্তাবহ সংলাপ:


"আমার একটি বই বেরিয়েছে, শুনেছো?"
"না শুনিনি তো? কিসের বই?"
"কবিতার বই।"


তুমি একান্তভাবেই নিভে গেলে।  
নিভে যাওয়াটাই প্রত্যাশিত ছিল।


"লেখালেখির পাশাপাশি সিরিয়াস একটা
প্রফেশনের কথাও ভাবো এবার , ভাবা দরকার না?"
"আমার এইখানে ভীষণ একটা বক্তব্য আছে।  
ভয়াবহ সিরিয়াস গোছের বক্তব্য।"
"কি বক্তব্য?"
"অর্থ আদত লেখালেখির জগতে
একটা অনর্থ নিয়ে আসে।
ওটাকে শত্রু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রাখাই ভালো,
ওখানে বেশি মাখামাখি করতে গেলে
আসলেই বড় অনর্থ ঘটতে পারে।"
"সফল লেখক কি নেই ? আছে তো ভুরি ভুরি !"
"তাদের পাঠকরাও মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত।  
এমন অবস্থা যে লেখার আগেই বই হিট !
ওটা তো ভিন্ন কথা !"
"তবে? জীবন চলবে কি ভাবে?"
"ওখানেই তো মূল প্রয়াস।
জ্বরের রোগীকে বড় জোর পথ্য দিতে পারো,
নিজে ডাক্তার হয়ে ঔষধ দিতে গেলে তো
হিতে বিপরীত হতে পারে, তাইনা?
তোমার লেখা তোমার সন্তানের মতোই
এসে হাত ধরবে,
তোমায় খালি লেখায়
সত্যি সত্যি নিজেকে খুঁজতে হবে।
আনুষঙ্গিক কোনো প্রয়াসে নয়।"  
"হুম, বুঝলাম। সবই মোটামুটি জানি,
তবুও কষ্ট হয়, জানোই তো!"
"এইটাই প্রকৃত উপশমের লক্ষণ।
কষ্ট আছে বলেই মানুষ প্রকৃত ভাবে বেঁচে থাকে,
কষ্ট লাঘবের প্রয়াসে।"
"বড় সত্যি কথা।"


স্বপ্নের শেষকথা:


মানুষ হয়ে জন্মানোর সাফল্যই স্বপ্ন।  
মূল্যবোধের স্বপ্ন,দিন বদলের স্বপ্ন।
কাঁচের ঝিলিকের ভীড়ে হেরে যাওয়া
ঘুমের ভেতর হীরের স্বপ্ন।


স্বপ্নবাজ আরো এক দিন যাপনের স্বপ্ন।
বেঁচে থাকা কবিতায় তোমার আমার স্বপ্ন।