ফুরিয়ে যাবার আগে ধোঁয়া ওঠে, জীবনের ক্ষুদ কুঁড়ো  থেকে। ভাজা ভাজা হয়ে যাওয়া তপ্ত কড়াইয়ের দাবদাহে কিছু দমকা বৃষ্টিপাতে ঘোর লাগা চোখে রোমিও জুলিয়েট আর দান্তে বিয়াত্রিচে খুঁজে বেড়ানোর চেষ্টা। তবুও ভালোবাসা, তবুও ভালো থাকা। আর মানুষে বিশ্বাস।  মানুষ লোক ঠকায়, অভূতপূর্ব কৌশলে এক জীবন আরেক জীবনকে ভোঁ কাট্টা দেখায় তুড়ি বাজিয়ে , তবুও শেষ পরিচ্ছদে মানুষ ফিরেও আসে। বিশ্বাসে মিলায় বস্তু , তর্কে বহুদূর।


সন্তানের ভাবনা খুব অতৃপ্তি আনে আজকাল। তারুণ্য প্রগলভ, তারুণ্য বেপরোয়া ও সাহসীও।  তবে যুঝবার সময়ে তারুণ্যের ঝুঁকি এবং বিপর্যয় দেখলে প্রায়ই মনে হয়,  মধ্যবয়সে পৌঁছবার পর বেঁচে থাকবার প্রয়োজনটা ঠিক কোথায়। জীবন পর্বত নয়,  যে বলবে কীলক হয়ে জগৎকে ভারসাম্য এনে দিচ্ছে অষ্টপ্রহর।  কোথাও ভুমিগ্রস্থ হতে ইচ্ছে করে , রাতের উঠোনে। যেখানে মানবিক কারণেই মানুষগুলোও চাঁদের আলোতে গলতে থাকে। চাঁদের আলোয় ফুলের গন্ধে তীব্রতর হয়ে ওঠা অনিবার্য কোনো ঘটনার সম্ভাবনার পাশ কাটিয়ে আমি জানতে পারি, আমি সক্ষম হলাম, ধোঁয়াশার ভেতর, ধুলোতে ধূসর হয়ে ওঠা ঘটে যাওয়া অংশগুলোতে হাত না বুলিয়েই চোখ মুদতে পারবার জন্য হয়তো।


স্রষ্টার সৃষ্টিতে চোখ মেলে দেখো।  তোমার দৃষ্টি, ব্যর্থ হয়ে, ক্লান্ত হয়ে, তোমার কাছে ফিরে আসবে, তবু স্রষ্টার সৃষ্টিতে কোনো খুঁত দেখবে না।


সাধনার আনমনা মগ্ন আলাপ, ঐশী কিতাবেও। আমি শুনছিলাম।  সৌম্য দর্শন এক মুখের অতীত স্মৃতির আদল আসে , যেন।


আমার চোখের জল শুকিয়ে আসছে দিন দিন।  কষ্ট পেলে চোখে জ্বালাপোড়া হতে থাকে, আর আমি কল্পনা করতে থাকি, অশ্রুবিন্দু হয়তো  স্রষ্টার মহিমায় অন্তর্গত বোধকে গলিয়ে আসতে,  ফিরছে বাড়ী , বহু, বহু দেরী করে।  প্রপঞ্চের ব্যবহারিক, প্রায়োগিক কুশলী জীবনবোধে অনুভূতির বেলাভূমি।


রোজ ভোরের কল্পনায় দমদম যাই, দম দেয়া খেলনা গাড়ীর সাথে।  সে গাড়ী গুটিয়ে গিয়ে রোবোকপ হয়, সন্তানের হাতের স্পর্শ নিয়ে।


যে ঝর্ণার নীচে ক্রমাগত লাফাতো, আম্মু, কি বলছো?
আমি আবার চেঁচাতাম, আমায় শুনতে পাচ্ছো?
সে খিলখিলিয়ে হাসতে হাসতে আরো জোরে চ্যাঁচাতো, আম্মু কি বললে এবার ?


এইবার বাপ আমার বাড়ী ফিরবে।  দিন গোনা শেষ। আর আমার টিমটিমে জীবনের ধৈর্য্যও। তার মুখ থেকে আমি এইবার বলবো , স্রষ্টার সৃষ্টি দেখলাম।  প্রচুর বড় বড় খুঁত তৈরী হয়েছে এই কয়মাসেই , দেখছি তাই।


সে হয়তো হাসবে।  হয়তো জড়িয়ে ধরে আনমনে হাতের খেলনা পান্ডাটাকে দোলাবে। আর আমি বুঝবোই না, তার ঠিক  এখন কাকে দরকার, পান্ডা না আমায় !


কখনোই শেষ হয়না, এতো দীর্ঘ এই জল্পনার কল্পনা।