ক্যান্টিনটা ছোট।  দেয়াল জুড়ে সিনেমার দৃশ্যপট , টুকরো ছবির চতুরঙ্গ।  বুলির মনে পড়লো, ছবিটা তার চেনা, সূর্য দীঘল বাড়ী। কুশীলবদের চেনার বহু আগেই আবু ইসহাকের এই উপন্যাসের সাথে তার একান্ত মুহূর্তে পরিচয়।  রাতের আকাশের নক্ষত্র পতনের গ্লানি মুছে গিয়ে জীবনের অমোঘ গল্পগুলোর মত। অথবা আরো স্পষ্ট ভাবে বলতে গেলে , কর্মস্পৃহাকে একান্তে ভালোবাসবার মত। দুধের গেলাসে সর জুড়িয়ে আসে, সৃজনশীলতার আস্তরে মরচে পড়বার দ্বিমুখীনতার গল্পগুলোও মোটাদাগে সেরকম কোনো এক ধাঁচের বোধহয়। ধান ফুরোলো, পান ফুরোলো, খাজনার উপায় কি ?  রসুন পর্ব আরো গতায়ু , দ্বিতীয় অধ্যায় জুড়ে। অদ্ভুত গতিময় জীবন জুড়ে খেয়ালের কারসাজি।


"চা খাবে নিশ্চয়ই ? চা দিতে বলি?" নূর জিজ্ঞেস করলো।
বুলি নীরব বিরস বদন এই ক্যান্টিনে  নিস্তরঙ্গ জীবনের প্যাঁচাল শুরুর আভাস পাচ্ছে বেশ কিছুক্ষন ধরে।  
সে না-বোধক মাথা নাড়লো।
"তাহলে কি খাবে? ঠান্ডা কিছু?"
তার গলায় স্বরের ওঠানামা কম।  বরাবরই।


সকালে মা নামাজ পড়ছিলেন।  জায়নামাজের পাশে রাখা সবুজাভ দো'আর বইটা থেকে ইস্তিখারার নিয়তে দু'রাকাত নামাজ পড়ে এসেছে  সে। অসম্ভব সব কিছুর ভেতর সম্ভব কিছু বিশ্বাসবোধ মানুষকে এখনো প্রচ্ছন্নে প্রগলভ রাখে , স্রোতস্বীনি খরস্রোতার সাথে পাল্লা দিয়ে।
ভোরবেলা ওযুর পানির ঠান্ডা স্পর্শ করে সে ধাবমান বিশ্বাস ধায় এখনো ,
প্রভু কালিমা মোচন করো, বরফ বিধৌত করো, তরল ও বাষ্পের সাম্যাবস্থায় ,
পাপমুক্ত করো,
যেমন নিকটবর্তী নয় পূর্ব আর পশ্চিমের কাল ,
তেমনি বিপদমুক্ত করো।


এই দৃশ্যটি নিয়ে বিজ্ঞাপণ সংস্থাগুলো মুনাফা করুক, তা তার কাম্য নয়।  কখনো ছিল না।


ঠান্ডা তাই খাওয়া হয়নি, কোন কালেই।


নভেম্বর ২৫ , ২০২২