প্রাণেরতরী-১


ঠাকুর বিশ্বরাজ গোস্বামী


কুসুম আলোতে ভরা  সকাল বেলা,
শিশির-প্রাণটি করে  ধূলায় খেলা,
নদীটি জোয়ারে ভাসে,
প্রাণেরতরীটি আসে, চাঁদের মেলা,
তরী ভরি পরবাসে  দুপুর বেলা।


ঝড়োমেঘ মাতাল ঐ  আকাশ জুড়ে,
বিদ্যুৎ চমক আসে  বাদল ফুঁড়ে,
দুরুদুরু করে প্রাণ,
বাতাসে যমের ঘ্রাণ, মারছে ছুঁড়ে,
নেই আর পরিত্রাণ  মরছি পুঁড়ে।


শতশত লোকজন  চৌদিক ভরা,
কাছে কাছে নেই কেউ  অদূরে সরা,
সাঁঝবেলা এলো কাছে,
তরীটি ভাঙ্গনে আছে, নোঙ্গর করা,
জলবেণী আগে-পাছে  নদীটি ভরা।


জমানো যা ছিলো সব  দিয়েছি তুলে,
ভেঙ্গেছি তরীটি আমি  নিজের ভুলে,
ইতিবেলা সেজে নেয়ে,
সাধ্য নেই যাবো বেয়ে, নোঙ্গর খুলে,
আসছে তরঙ্গ ধেয়ে  নদীর কূলে।


রাঙ্গা সেই শিশুভোরে  অবুঝ মনে,
করেছি ধূলার খেলা  সবুজ বনে,
দিনটি চমৎকার,
হয়েছে আমার হার, জীবন রণে,
কাছে নেই কেউ আর  বিপদ ক্ষণে,


নদীতে তুফান ভারি  ভাঙ্গিছে কূল,
তরীটি আমার শুধু  ভেবেছি ভুল,
ভেঙ্গেছি তরীর হাল,
ছিঁড়েছি ধবল পাল, গিয়েছে মূল,
দিচ্ছে কাল-মহাকাল মরণহুল।


ইচ্ছার আগুনে পোঁড়া  হালটি ধরে,
খুলেছি প্রাণেরতরী  দুপুর পরে,
আমার কাজের ফল,
শুধু দু'আঁখিরজল, সম্বল করে,
তরীতে সকল আমি  দিলাম ভরে।


বুঝিনি তরীর মাঝে  রয়েছে অরি,
তাদের কথায় ভুলে  কাজটি করি,
ডুবুডুবু তরীটায়,
বেলাটি আঁধারে খায়, ভয়েতে মরি,
নিও প্রিয় কিনারায় প্রাণেরতরী।