প্রাণেরতরী-৪০


ঠাকুর বিরাজ গোস্বামী


কতনা সোহাগে রাগ অনুরাগে
সাজিয়ে দিয়েছো তরী, অপরূপ মনোহর
বোঝাই করেছি অরি, সারাটি জীবন ভর
বুঝিনি লুটেরা তারা,
গেপনে গোপনে করে সব লুট
হয়েছি আসল হারা।


তরীটার মাঝে তোমার-ই নাম
যতনেই ছিলো লেখা, প্রথম সকাল বেলা
আজ তা যায়না দেখা, তরী করি অবহেলা
রেখেছি দুষিত জলে,
তোমার নামটি লিখিনি কখনো
গিয়েছি নষ্টের দলে।


তরীখনি আজ রেখেছি যতনে
সাঁঝনা বেলার ঘাটে, আমার নিজের হাতে
কে এসে নঙ্গর কাটে, নিতে চায় ঘোর রাতে
বুঝতে পারিনা আমি,
লুটে নিয়ে ধন করে অপরাধী
আমাকে দিবস-যামি।


ভারা গোন পেয়ে মনের পুলকে
বাইছি প্রাণেরতরী, এখন ভাঙ্গন কূলে
একাকী আজকে মরি, রাশি রাশি ভুলে ভুলে
ডুবুডুবু তরীখান,
তরঙ্গ নোদিতে ভারি আরো দেখি জলে বান।


সুজন নাবিক তরীখানি তার
পুবোন বেলায় পেয়ে, মূলটা রেখেছে ঠিক
এক মনে গেছে বেয়ে, হারায়নি সত্য দিক
দেখছি নয়ননীরে
প্রাণেরতরীটা নিয়ে শুধু আমি
রয়েছি ভাঙ্গন তীরে।


অনেক ডেকেছি সুজন মাঝিকে
আঁখিজলে ভেসে ভেসে, তরীটি ফিরাও বলে
নিয়ে যাও পরদেশে, একাকী যেওনা চলে
কখনি ফেরেনি তারা,
আপনার দোষে ইতিকাবেলায়
হয়েছি দু'কূল হারা।


আশা ছিলো মনে জোয়ার থাকতে
কুলে যাবো তরী খুলে, হলোনা জীবনে আর
সেক্ষনে রয়েছি ভুলে, করে মিছে কারবার
ধীরে ধীরে গেছে বেলা,
ভাবিনি কখনো যেতে হবে একা
ছেড়ে এই চাঁদমেলা।


নিরুপায় হয়ে খুলেছি নঙ্গর
তোমার প্রেমের গানে, ইতিকাবেলার রাগে
দারুণ ভাটার টানে, রবি যায় সাঁঝবাগে
যমেলা ভয়েতে মরি,
কুলে নেও তুমি তোমার দেওয়া
আমার প্রাণেরতরী।