প্রাণেরতরী-৪১


ঠাকুর বিশ্বরাজ গোস্বামী


চলছে তরীখান, পেয়ে নদীর বান
তরঙ্গে দুলে দুলে,
চায়না ডান বাম, বাইছে অবিরাম
পিছের স্মৃতি ভুলে।
নবীন কাঁয় নেয়ে, ইচ্ছা মতন বেয়ে
গাইছে সুখে গান,
ভিড়ায় তরী ঘাটে, যায় নানান হাটে
হারায় বীজধান।
মনের কতুহলে, ইচ্ছারতাপানলে
তরীটা ভরে যত,
তরীটা যার দান, প্রাণেতে যার গান
ভুলছে তারে তত।
বীজধানটা ছিলো, নষ্ট-ই করে দিলো
মিছে বেচা-কেনায়,
দেখেনি খাতা খুলে, হিসাবে আছে মূলে
সীমাহীন দেনায়।
বাকিটা আড়িপেতে, বুনে অজন্মা ক্ষেতে
বীজটা করে ক্ষয়,
হুতাশা বুকে নিয়ে, কাজের ফল দিয়ে
তরীটা ভরা হয়।
বাতাসেরই রাগে, নদীতে ঢেউ জাগে
ভাঙ্গে নোদির তীর,
আপন হারা হয়ে, কাজের ফল লয়ে
ঝরায় অশ্রুনীর।
পালটা যায় ছিড়ে, ঝঞ্ঝা বায়ুর মিড়ে
তরঙ্গে ভাঙ্গে হাল,
জলবেণীর রাগে, তরীটা ঘোরে আগে
আকালে আসে কাল।
নেশার ঘুম ভাঙ্গে, তরী ডুবছে গাঙ্গে
নীরবে দেখে চেয়ে,
হিসাব করে শেষে, চোখেরজলে ভেসে
হয়েছি মিছে নেয়ে।
প্রাণেরতরী যার, ঠিকানা খোঁজে তার
সময় চলে গেলে,
আসে প্রাণের অরি, ডুবে প্রাণেরতরী
বিচারে যায় জেলে।