আজ থেকে,অনেক কাল ধরে ভাসছি জলে,
কবে পৌঁছাবো আমার বাড়ি,তা জানা নেই।
আবার কি দেখা হবে তার সাথে? কে জানে!
সেই বিকেল বেলা,পাড়ি দিলো আমাদের রানী
সাত সমুদ্র পার করে,সেই নিয়ে যাবে দেশে।
তখনো ভালই ছিলাম,মনে ছিল অটল বিশ্বাস‘
সাগরের জলের মতো স্বপ্ন,চোখে আন্দোলিত।
মনে এক বিস্ময়কর প্রশ্নও,জেগেছিলো বটে,
আকাশের ঘনিষ্ঠ কালোমেঘ,তখনো কাঁদে নি,
এই পৃথিবীর জনজীবন ছেড়ে,পাড়ি দিয়েছি,
একাই আপন মনে,নিজেকে শান্ত করেছিলাম।
পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে,অপর প্রান্ত যাওয়া,
এতোটা কঠিন আর কঠিনতর তা অকল্পনীয়।
পৃথিবীর মাটিতে সূর্য আসে দেরিতে,শ্রীর্ঘ চলে যায়,
এখানে মনে হয় সব সময় আলোকিত,সত্যিই তাই।
পৃথিবীর এক নতুন কল্পলোক,এখানে লুকানো,
যা না দেখলে,মানুষ্য মন ভাবতেই পারবে না।
গোলবৃত্তাকার রামধনু,গভীরতার নীল সমুদ্রে,
আবার বৃষ্টির মন মাতানো লুকোচুরি খেলা।
আর ইন্দ্রের ইন্দ্রজালে,ইন্দ্রধনুস যেন মায়াবী,
যেখানে কোনো পথ নাই,নাই কোনো দিক।
যেন সূর্য চন্দ্র একই প্রেমে বাঁধা,চিরন্তন বন্ধনে,
আকাশ যেন মাঝে মাঝে তার,পোশাক পাল্টায়।
কখন বেগুনি,নীল,আকাশী,হলুদ,সবুজ,কমলা লাল,
দূরে দেখি হাজার পাখি,জলকে ছুঁয়ে উড়ে যাচ্ছে।
আসলে ওরা পাখি নয়,সমুদ্রের উড়ন্ত মাছ,
বিশ্বাস করো বা না করো,কিছু এসে যায় না।
কিছু কিছু পাখি,মাঝে মাঝে চোখে পড়ে,
নাম না জানা,উভচর বিশাল রাক্ষুসের মতো।
মানুষ তুলে নিয়ে যাওটা,তাদের পক্ষে কিছুই নয়,
তবুও তারা নিজের মনে,উড়ে চলেছে অজানায়।
তাদেরও কথাও বাড়ি হবে হয়তো!বা সেও পথ হারা,
দানোবের মতো,কালো ডুবো পাহাড় শৃঙ্খলা।
আসলে তা নয়,ওরা তিমির পরিবারের অংশ,
তাদের ডাক যেন এই শান্ত নীল সামুদ্রিক
পরিবেশকে,
চঞ্চল হতে আরও চঞ্চল,করে তুলছে ধিরত্বরে,
চলেই চলি,চারিদিকে লবণাক্ত জল আর জল,
এ জল ঘোলা নয়,সচ্ছ কাঁচের মতো ভারী,নীচে আছে,
পাতাল পূরী,যেখানে জল পরিদের থাকা বিস্ময়কর নয়।
সকালে সোনালি রৌদ্র ছুঁয়ে যায়,সমুদ্র ললাট,
যেন অলঙ্কারে বেঁধেছে,ভালোবাসার মানুষকে। এখানে আকাশ বলে কিছু নেই,সব সমানই বটে,
যেন আকাশের প্রতিবিম্ব,সমুদ্রের আয়নাতেই,
দেখতে পাওয়া যায়,কখন কালো চাদরেও মুখ ডাকে সে।
আবার রুপোলি চাঁদের মায়ায়,মায়াময় গগন
যেন মুক্তো দিয়ে সাজিয়ে,রেখেছে তার হৃদয়।
যেন কারও অপেক্ষায়,ঝিকিমিকি তারা গুলো,
আমরা সরে সরে যাচ্ছি জলের বুকে,তারা নয়,
তারা যেন সব প্রান্তেই দৃশ্যমান,নানান ভঙ্গিমায়,
কখনও সপ্তর্ষিমণ্ডল,কালকেতু বা অন্য কেউ।
তারা যেন জীবন্তদৃশ্য ,সৃষ্টির আদি কাল থেকে,
তারা বরাজমান,স্মৃতির পাতাতে সব লেখা আছে।
পাতা ওল্টালেই,সব সমস্যার সমাধান নিশ্চিত।
কিন্তু সেই পাতা পড়া,এতোটা সহজ নয়!
আন্তরীক্ষ ভাষা কেউ কি জানে?মনে হয় না!
আমি যদি জানতাম,পড়ে আসতাম,সেই গল্প,
যেখানে গল্প বলে কিছু নাই,সব কিছুই সত্য।