। আদিপর্ব।


আইনকে জন্মান্ধ বানালেন রাষ্ট্রের জন্মদাতারা।
তিনি দেখতে পাবেন না, ধনী গরীব হিন্দু ইসলামী, দলিত উচ্চ বা নারী পুরুষ,
অতঃপর, তাঁরই  হস্তে ধৃত করালেন রাষ্ট্রকে তারা,
ভাবলেন , যে দেখেনা, তার বাকি ইন্দ্রিয় সজাগ থাকে। সুবিচার ঠিক পাবে দেশের মানুষ।


অন্ধ অভিভাবক যাতে একা না হন , সেটাও দেখতে হবে ।
নানা দেশ খুঁজে জন্মদাতারা নিয়ে এলেন সর্বগুণান্বিতা শ্রেষ্ঠতমা সংবিধানকে,
আইনের সাথে রাজ্য সামলাবেন তিনি ।দেশ পৌঁছাবে আবার অতীতের গৌরবে,
সেই আশায় দুজনের গাঁটছড়া বাঁধা হলো। পার্টিশনের লাশেরা রইলেন নীরব সাক্ষ্যে।


চক্ষুষ্মতী সংবিধান আইনের অন্ধত্বকে আরো মান্যতা দিতে চাইলেন সাথী হিসেবে,
তাঁর মনে হলো, সেটা প্রতিবন্ধকতা নয়, বরং প্রজাপালনের জন্য  আবশ্যক  ।
অনুরাগিনী ভাবলেন , তাঁর দৃষ্টি চারদিকে গেলে হয়তো বা বিপরীত মতের জন্ম দেবে,
তাই সেরকম কিছু না দেখতে মিশকালো রুমালে তিনি বেঁধে নিলেন চোখ।


এই ঘটনার থেকে বহুদূরে, নিতান্ত সাধারণভাবে বড় হয়ে উঠছিলেন সমানাধিকার।
তার পিঠোপিঠি ভাই পেট-ভরা-ভাত ও সব-হাতে-কাজ , আরেকটু ছোটো শিক্ষা আর মূল্যবোধ ,
প্রজারা জানতেন এই পাঁচ ভাই আগামী প্রজন্মে হবেন দেশের শাসনের মূল অংশীদার,
যেটা জানতেন না , সেটা এই, সেই আরোহন খুব সহজে হবে না। পদে পদে বাধা দেবে  নানান বিপদ।


ওদিকে প্রাসাদে তখন যুবরাজ দুর্নীতি নেতৃত্বের ভার নিচ্ছেন, তাঁর ভাই ধর্মান্ধতাকে নিয়ে।
একশো ভাইয়ের নাম মনে রাখা সম্ভব নয়, কেউ ভোটের-জন্য-কোটা , কেউ ধনীর-জন্য- সব,
মোটমাট এদেরই দখলে গেছে রাজার প্রাসাদ। আইন ও সংবিধানকে তাঁরা রেখেছেন পুতুল বানিয়ে,
তাঁরা তো দেখতে পান না ।  শোকার্ত চিৎকারে তাদের বোঝানো হয়, ওটা উৎসব।


কোনো এক সম্ভাবনায় গর্ভিণী সন্ধ্যায়, পাঁচ ভাই এসে দাঁড়ালেন রাজার প্রাসাদে,
আইন জানেন এঁরাই দেশের উত্তরাধিকারী, সংবিধান জানেন এঁদের অধিকার স্বীকৃত,
তবু তাঁরা দ্বিধাগ্রস্ত। তাঁদের বোঝানো আছে,  আর কেউ আগামীর রাজা নয়  দুর্নীতি বাদে,
তাঁর স্তাবক ও বন্ধুদের মুখে শুধু গুণগান শুনেছেন। বাস্তব বিকৃত আর বিক্রীত।


এইবারে কী হবে?  কে জয়ী হবে এই আসন্ন সংঘাতে? মাফ করবেন, আমি নই ত্রিকালদর্শী ব্যাসদেব ,
অধম শুধু বর্তমানকে জানে। যদিও আইন দৃষ্টিহীন, সংবিধান তো নন, তাঁর ইচ্ছাধীন খোলা চোখ,
হয়তো তিনি দেখতে পাবেন প্রজারা ওই পাঁচ ভাইকেই চাইছেন, উল্টিয়ে যাবে তবে একশো ভাইয়ের করা তাবত হিসেব,
অথবা এ কাহিনী প্রচলিত মহাকাব্য অনুসারী হবে । অন্তিম হবে তার সর্বনাশক।


বাসুদেব? এ সময়ে উহ্যতে রেখে দিই তাঁকে। সব ঋজু শিরদাঁড়া শ্রীকৃষ্ণ হোক।


আর্যতীর্থ