। অভৌতিক।


এক বাড়িতে খুব ছিলো ভূত
ভয় দেখাতো রাত্রিবেলায়,
বেলা হলে গহীন নিশুত
টিঁকতো না কেউ ভূতের জ্বালায়।
কতরকম ভূত যে ছিলো,
সে আর খুলে বলবো কত,
পড়তো লাথি , চড় আর কিলও,
কেউ যখনই রাত কাটাতো।
ব্রহ্মদত্যি হাঁটতো ছাদে,
কন্দকাটা নাচতো তা থৈ
শুনতো সবাই পেত্নী কাঁদে,
বলতো মেছো মাছভাজা কই।
বাড়িওয়ালা ছিঁড়ছিলো চুল
ভাড়াটে তার জোটে না এক,
বন্ধু বলেন কর না গুগল,
ভালো কোনো গুণীনকে দ্যাখ।


সেইমতো সার্চ করার পরে.
পাওয়া গেলো গুম-বাবাকে
হোকাস ফোকাস ছু-মন্তরে
ভূত মেরেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে।
খুব সামান্য দক্ষিণা তার
হাজার দশেক আর এক টাকা,
তামাম ভূতকে করতে সাবাড়,
সেই ওঝাকেই হলো ডাকা।
নিশুত রাতে বাবা বসে,
মন্ত্র পড়েন উচ্চস্বরে,
মামদো লাগায় লাথি কষে,
কান নেড়ে দেয় একানড়ে।
ভোরের বেলা ঘরে ঢুকে
সবাই দেখে বাবার কি হাল
কালসিটে তার সারা মুখে
ভূত করেছে কিলিয়ে কাঁঠাল।


সাহস করে সেই বাড়িতে,
যাচ্ছিলো না কোনো ওঝা,
শেষ একটা চেষ্টা দিতে
মালিক আমার কাছে সোজা।
বলে অনেক নাম শুনেছি
আপনিই তো আর্যতীর্থ
পদ্য বলেন এমন নাকি,
শুনশান হয় প্রবল ভিড় তো।
মানুষ যখন এতই কাতর,
আপনি যা সব লেখেন শুনে
নামান আমার বুকের পাথর
তাড়ান না ভূত কাব্যগুণে।
আমি ভাবি চুলকে মাথা,
প্রশংসা না নিন্দে ওটা,
যুগ পড়েছে এখন যা তা,
কষ্ট বড় শ্রোতা জোটা।
যাকেই শোনাই মারতে আসে,
প্রায় খেয়েছি ধোলাই আড়ং,
ভাল্লাগে না এ সন্ত্রাসে,
ভূতকে গিয়েই শোনাই বরং।


নিশুত রাতে সেই বাড়িটায়
ফোনের সাথে আমি একা
চারদিকে চোখ জ্বলছে ভাঁটায়
আবছায়াদের যাচ্ছে দেখা।
খটাশ খটাশ হাঁটছে খড়ম,
হি হি হা হা হাসছে কারা
ঠান্ডা যেন নামছে চরম,
জাগছে ভয়াল ভূতের পাড়া।
তড়িঘড়ি ফোনটা খুলে
শুরু করি কাব্য আমার,
যেমনটা হয় বিজলি ছুঁলে
কোথায় যেন সে চিৎকার।
আজকে আমি পেলাম শ্রোতা,
শুরু করি চেঁচিয়ে বলা
বাঁপরে মাঁ’রে পাঁলাই কোঁথা
আর্ত কাঁদে ভূতের গলা।


কাঁপিয়ে গলা শেষ হয়েছে
গোটা দশেক পদ্য সবে,
নিকষ কালো আঁধার ছেঁচে,
ভূতরা দাঁড়ায় কলরবে।
বললো তারা করজোরে,
সমস্বরে নাকি সুরে,
আঁর্যতীর্থ থাঁমনা ওঁরে
ছেঁড়ে বাঁড়ি যাঁচ্ছি দূঁরে।
বাড়িওয়ালা খুবই খুশি,
আমায় খাওয়ান পাতটি পেড়ে
আমি আমার ভাগ্য দুষি,
পদ্য আমার শুনবে কে রে।
ভূত শোনেনি কাব্য যখন
বন্ধু তোমার ভাগ্য খারাপ
পদ্যে হলে মন উচাটন,
তোমার ওপর আসবে সে চাপ।


আর্যতীর্থ