। অবিশ্বাসী।


এ প্রাসাদে অগুন্তি ঘর,
বাসিন্দা একজন, নাম ঈশ্বর।
সব ঘরগুলোতেই রয়েছে প্রার্থনা শোনবার সুচারু ব্যবস্থা ।
‘আমেন’ , ‘ইনসাল্লাহ’ ‘ ওয়াহে গুরু’ ‘মাতৃরূপেণ সংস্থিতা’
ইত্যাদি পৌঁছায় ঠিক ঠিক ঘরে,
যাদের বিশ্বাস নেই ঈশ্বরে,
তাদের বিরুদ্ধতাও জমা হয় প্রাসাদের এক কোণে,
মাঝে মাঝে বের হয়ে নিভৃত ভ্রমণে ,
তিনি দেখে নেন ঠিক,
সন্তান কয়জনে হোলো নাস্তিক।


ইদানিং ঈশ্বর খুব চিন্তিত।
তাঁর নাম যেই সব ঠোঁটময় গুঞ্জিত হয়,
তারা সুবিধের নয়।
প্রেম বা শান্তি ছেড়ে আজকাল তাঁর নামে জেগে ওঠে ভয়,
ভেসে আসা বহু মানুষের শেষ প্রার্থনা থেকে বুঝেছেন তিনি
  তাঁর নামে মানবতা নিয়ে চলে খেলা ছিনিমিনি,
অসংখ্য ঘরওয়ালা ঈশ্বরী প্রাসাদখানা
ধর্মের প্রোমোটার দখল করতে চায় গোটাটাই,
স্বভাবত মতলব সফল করতে গেলে
মালিককে বাদ দেওয়া চাই।


ঠিক তাই হলো এক দিন।
ঈশ্বর বুঝলেন তিনি পরাধীন,
কখন এক কু-অস্তিত্ব নিয়েছে প্রাসাদ মালিকানা নিয়ে ।
শান্তি ও করুণার তাবত বাণীকে মুছিয়ে,
সে আঁধার হত্যাকে বলি বলে করছে প্রচার।
প্রার্থনা-শোনা ঘরে কান্নার মতো ঘোরে
ভয়ানক মৃত্যুর শেষ চিৎকার।
ঈশ্বর ছুটে ছুটে যেতে চান ভক্তের কাছে,
কিন্তু পৌঁছতে পারেননা মোটে,
প্রতি ঘরে নিঃসীম অন্ধতা তালা হয়ে ঝুলে আছে।
সন্তানদের থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন তিনি আজ,
তাঁকেই বাইরে রেখে শব-ভূক হিংস্রতা নিজেদের গায়ে তোলে ঈশ্বর সাজ।


ঈশ্বর ফিরে যান নিরিশ্বরবাদীদের নির্দিষ্ট কোণে।
যারা নাস্তিক ছিলো , চমকিয়ে উঠে তারা শোনে,
নির্বাসিত অরূপ পরম শুভ চেতনার চরম ঘোষণা...


‘আমি ঈশ্বর বলছি। তোমাদের ঈশ্বরে আমি বিশ্বাস করিনা।’


আর্যতীর্থ