। আধাআধি।


এই তো সেদিন এক মশগুল আড্ডায়
একটি প্রশ্নবাণে সব্বাই গাডডায়।
কে বলেছে তুফানটি ওঠে শুধু চা-কাপে,
টলমল হয়ে যেই রসিকের পা কাঁপে,
অমনি সে ভিড়ে ছোঁড়ে মৌলিক সওয়ালই
( বেরসিক ভাবে যেটা মাতালের বাওয়ালি)


হয়েছে কি , সন্ধ্যেতে মিলে ক্লাসমেটরা
গেলাসে নিয়েছি ভরে স্কচ এটসেটরা,
বিবিধ বিষয় নিয়ে হচ্ছিলো গুলজার
(দুনিয়ার সেরা জ্ঞানী গ্লাসখানা ফুল যার)
কেউ বলে সিনেমা তো বচ্চনে থেমেছে
অ্যাংরি ম্যানের পরে মান শুধু নেমেছে
আর কেউ বলে ওঠে হাল এত বুরা না
যুগের নতুন আলো আয়ুষ্মান খুরানা
রব ওঠে বলিউড যাক চলে ডাম্পে
দুনিয়া বেহাল করে পুতিন আর ট্রাম্পে
অমনি আরেকজন কপচায় নেশাতুর
আমেরিকা রাশিয়া দেশ থেকে মেলা দূর
বরং নজর দাও ঘটমান ভারতে
রক্তের ছোপ যায় রোজ আরো গাঢ়তে।
এরকমই নানা মুনি নানা মত দিচ্ছেন
মধ্যে অলক্ষিতে সুরাসুখ নিচ্ছেন
হঠাৎ চেঁচায় এক বেয়াদব খেয়ালী
‘সমাধান করবে কে , জটিল এ হেঁয়ালি,
হাতে ধরা এই গ্লাসে আধাআধি পানীয়
আধাভরা আধাখালি কোনটা তা জানিও।’


শোরগোল পড়ে গেলো সেটা শুনে আড্ডায়
মতামত দিতে যদি একজনও বাদ যায়!
কেউ বলে খালি থেকে ব্যাপারটা শুরু তো
সুতরাং আধা খালি তুলনায় গুরু তো
কেউ বলে ধ্যাত্তেরি ,না ভরলে গ্লাসটা,
তুলে আর সেটা কেউ ঠোঁটে তো ঠেকাস না।
সুতরাং ভরা থেকে শুরু করে সব গ্লাস
আধাভরা মানে হলো একশোতে পঞ্চাশ।
খালি আর ভরা নিয়ে সে কি বাঁধে দ্বন্দ্ব
বাকি সব কথা হলো ঝপ করে বন্ধ,
তর্কটা চালু ছিলো পৌনে তিন ঘন্টা,
তবুও কোনটা ঠিক বুঝলো না মনটা
বিনা কোনো মিমাংসা আসরটা সাঙ্গ
গুটিগুটি অগত্যা যাই ঘরপান গো..


ঘরে ফিরে হাতে নিয়ে একখানা গ্লাসকে
বউয়ের সামনে ধরি তুরুপের তাসকে।
অর্ধেক জল ভরি,( আরে না না, মদ নয়)
প্রিয়তমা কার্যটি দেখে হয়ে তন্ময়।
বলে উঠি ভেবো না এ মাতালের কীর্তি
এসেছি হেঁয়ালি নিয়ে আড্ডার ফিরতি
এই যে নিয়েছি ভরে মাঝামাঝি জলকে
আধা খালি নাকি ভরা এসো যাই তর্কে।
( অন্য সময় হলে এ সাহস দুষ্কর
পেটে মাল বলে ওঠে লাগামটা লুজ কর)
বউ বলে ঘুমচোখে এত শোর মাচালে
বলবে পড়শি ভারী গোল করে মাতালে।
ধাঁধাটা কোথায় এতে, খামোখা চেঁচাচ্ছো,
নির্ভর করে তুমি ঢালছো না খাচ্ছো।
যেইখান থেকে শুরু তাকে রেখো জিরো-তে
রাত হলো , তড়িঘড়ি যাই বাপু জিরোতে।


আর্যতীর্থ