। অমোঘ।
( সাতটা ছন্দকে বৈদিক ছন্দ বলে। গায়ত্রী, উষ্ণীক, অনুস্টুভ্, বৃহতী ,পংক্তি, ত্রিস্টুপ্ ,জগতী। গায়ত্রী অষ্টাক্ষরা ও ত্রিপদী, তারপর থেকে প্রতি ছন্দে চারটি করে অক্ষর বেশি হয় লাইনে।অবশেষে জগতীতে গিয়ে ৩২ অক্ষর। এগুলো সংস্কৃত ছন্দ, বাংলার সাথে সম্বন্ধ নেই। এই লেখাটা সেই ছন্দদের স্মরণ করে।)


তুমি আমি আপনি সে
চেনা ছক বেহদিশে  
সুখ খুঁজে চলি বিষে।


রিপুর মিছরিপানা মোহস্বাদে
ফাটল ধরতে থাকে সব বাঁধে
বেনোজলে ভেজে মন কি আহ্লাদে!


কিছুদিন পরে ভেজাকেই লাগে স্বাভাবিক
নিজের জন্য বেঁচে ভেবে বসি তা সামাজিক,
লক্ষ লোকের ভিড়ে সক্কলে একলা পথিক।


অমোঘ সন্ধ্যা আসে অবশেষে প্রতিটি আকাশে ঘনিয়ে
সমকাল শেষ, অতীত ডাকতে থাকে হাতছানি দিয়ে
দামী ভেবে যা জমানো রয়েছে ,  ভাবনা থাকে না ও নিয়ে।


পিছু ফিরে ঝাপসা কুয়াশা, মুহূর্ত জমেনি কিছু স্মৃতির ভাঁড়ারে
হাতড়িয়ে খোঁজা কোনো অলীক সুযোগ, যদি পথে ফিরে যেতে পারে,
ফিরতে শেখেনি বুড়ো ঘড়ির কাঁটারা, নিরুপায় তারিখেরা বাড়ে।


তখন বার্ধক্য এসে উল্টো করেছে দান , অজান্তে কেঁচে গেছে সব পাকা ঘুঁটি,
রোজনামচার পাতা হলদেটে হয়ে আসে, কম্পিত অক্ষরে শেষের ভ্রুকুটি,
একা একা বাঁচা মন হঠাৎ বুঝতে পারে সমস্ত মুছে যাবে হয়ে গেলে ছুটি।


সারাটা জীবন ধরে জমানো তাবত ধন নিস্ফল লাগে, লোলুপ দৃষ্টিতে প্রজন্ম দেখে,
পাঁচখানা ইন্দ্রিয় ক্রমশ বিলীয়মান,  স্মৃতিদের শিখাগুলো নিভন্ত হয় একে একে,
অবশেষে একদিন ক্লান্ত ক্যালেন্ডার অব্যর্থ ব্যর্থতা মেনে নিয়ে   ভুয়ো এপিটাফ লেখে।


আর্যতীর্থ