। বিদায়মালা।


আজকাল প্রয়াণদিবস কেমন ঘটা করে হচ্ছে,
দেখেছো হারাধন?
জন্মদিনের থেকেও বেশি উদ্যোগে
মৃত্যুর তারিখের এই যে স্মরণ,
সেটা কি স্রেফ একটা হুজুগ
নাকি আমাদেরই  চাপা পাপবোধ ,
যাদের গলায় মালা,
তাদের কাজের সাথে আমাদের যাপন-বিরোধ,
সে কথা ঢাকতে তাই বেদী করে
পুজো করি নতুন এক দেবতার মতো,
মানুষ না হলে তাঁরা কেন পিছু যাইনি যে,
অজুহাত থাকে কিছু হাতে অন্তত।


হারাধন, মণীষীর সংখ্যাটা কম নয় দেশে,
বরঞ্চ যথেষ্ট বেশি,
মনুষ্য সংখ্যাটা তবু বাড়ে না যে, 
রসিকতা বলো দেখি এটা কোনদেশি!
অবশ্য বলতে পারো ,
লোক গুনে আঁতকিয়ে ওঠে প্রতি আদমসুমারি,
নেতারাও ছুতো দেন,
এই জনসংখ্যাকে নিয়ে কী করতে পারি,
সেখানে মানুষ কম,
বলাটা কেমন যেন জ্ঞান দেওয়া আঁতেলের ভানে 
হারাধন, বলো দেখি তবে খুব ভালো করে ভেবে,
মনুষ্য কথাটার আছে কোন মানে।


জেনে রাখো চিরকালই  অসৎ-য়ের সম্পদ বেশি,
মিথ্যেরই বেসাতি অধিক,
সুদূর অতীত থেকে অনাগত আগামীতে
এ নিয়ম রয়ে যাবে ঠিক।
ঘুষ খাওয়া মানুষের চারতলা বাড়ি হবে,
একই কাজে সৎ যাবে বাসে ঝুলে ঝুলে,
মোটকথা, বাস্তবে বিপরীতই ঘটমান সর্বদা,
ভুলে যাও শিখেছো যা স্কুলে।
তবুও এসব সয়ে যারা সৎ থেকে যায়,
ভালো থাকে স্রেফ ভালো থাকার তাগিদে,
তাদেরই মানুষ বলে ,জানো হারাধন,
অসৎ হয়না যারা পেলেও সুবিধে।


কটা লোক খুঁজে পাবে এরকম বলো
ওই আদমসুমারি হওয়া দেড়শো কোটিতে?
স্বচ্ছন্দে অসৎ হয় সাড়ে চোদ্দ আনা, 
মণীষীর বাণী কাজ বইয়ের পাতায় থাকে যতনে নিভৃতে।


হারাধন, জন্মের দিনে নয়,
আমরা যোগ্য তাই প্রয়াণদিবসে ফটো খুঁজে মালা দিতে।


আর্যতীর্থ