। বিকর্ণ।


যাজ্ঞসেনীর খুলছে শাড়ি , টানছে ধরে দুঃশাসন,
দায় ছিলো যার গর্জে ওঠার, নিচু মাথায় সে পাঁচজন।
দুর্যোধনের নগ্ন ঊরু. ইঙ্গিতে তার ধর্ষকাম,
হস্তিনাপুর দেখছে বসে, ধ্বস্ত হতে তার সুনাম।
অন্ধরাজা সিংহাসনে, আর্ত চেঁচান বৌমা তার,
নিজের দলের নির্যাতনে, সব রাজা হন নির্বিকার।
কর্ণ বসে হাসছে হা হা, রাজার দলের লোক তো সে
শর্তবিহীন সমর্থনেই , তাবত আরামসুখ বশে।
ভীষ্ম দ্রোণ কৃপ নীরব, সরকারী লোক হাজার হোক
রাজার কথাই তোমার কথা, তুমি যখন রাজার লোক।
খল শকুনি দেখছে সবই, বস্তুত সে ধ্বংস চায়,
ঘরের মাটি লাল হয়ে যাক, দেশবিভাগের যন্ত্রণায়।
সুশীল সভায় ঘটছে যখন, রাজঅপরাধ জঘন্য,
ঠিক তখনই তার বিরোধে, চেঁচিয়ে ওঠেন বিকর্ণ।


বিকর্ণ নন কেউকেটা লোক, একশো ভাইয়ের একজনা
তেমন করে এর আগে কেউ, তার কথাটাই জানতো না।
জতুগৃহে কাড়েননি রা, অন্তত তা নেই লেখা,
ভীমকে যখন বিষ খাওয়ালো, তখনও তাঁর নেই দেখা।
কিন্তু যখন প্রকাশ্যতেই কাড়ছে নারীর আব্রু কেউ,
স্তব্ধ জিভের চুপসাগরে, বিকর্ণ হন একলা ঢেউ।
চেঁচিয়ে ওঠেন রাজার কুমার, যুবরাজের বিরুদ্ধেই,
মহাবলী পান্ডবেরও, তখন গলায় সে সুর নেই।
রাজাও যখন নীরব থেকে, সায় দিয়ে যায় ধর্ষণে,
ঠিক তখনই সমস্ত যুগ, বিকর্ণদের স্বর শোনে।


আমরা যারা কিচ্ছুটি নই ,একটি মোটে ভোট কেবল,
অত্যাচারের সামনে এলে, সঙ্গী শুধু চোখের জল
পোষ্যভাবে জাবনা চেবাই, অন্ধ এবং নি-কর্ণ,
প্রার্থনা থাক আমরা যেন, একবার হই বিকর্ণ।


মরার আগে হতেই হবে, রাজার সভায় বিকর্ণ।


আর্যতীর্থ।