।বই - হীন।


বন্ধু বলেন বই-দিন গেলো, লিখছো না কেন কিছু?
আমি মুঠোফোন নেড়েচেড়ে যাই, মুখ যথারীতি নিচু।
ম্লাণ হাসি হেসে মাছি ওড়ানোর মতো করে হাত নাড়ি,
চাইছে সবাই লিখি শোকগাথা বই-শবযাত্রারই।


ছেলেবেলা ছিলো যন্ত্রবিহীন, বড়জোর ওই রেডিও,
বইয়েরা ডাকতো মলাটের থেকে, অজানা সফরে রেডি হ’!
কিশোর ভারতী শুকতারা ছিলো, আনন্দমেলা পাক্ষিক
তাছাড়া হাজার গল্পের বই ছিলো বড় হওয়া সাক্ষী।


সদ্য যুবক পড়েছে সুনীল, গদ্যে এবং কবিতায়,
দুই সমরেশ, সঞ্জীব আর রমাপদ গিলে লোভী খায়।
অতীন বিমল শীর্ষেন্দুও বই-রূপে ক্ষণ ভোলাতেন,
নীরেন্দ্রনাথ, শক্তি শঙ্খ অমিতাভ মন দোলাতেন।


একালের যুগে শৈশব থেকে মানুষ শিখছে পি ডি এফ
সার্চ করে যেটা মিলবে গুগলে বইয়ে খোঁজে কোন ইডিয়েট!
সকলে এখন কিন্ডল পড়ে, ই-কমার্স টানে লক্ষ্মী,
আধুনিক যুগে কটা লোকে নেয় বই কিনবার ঝক্কি?


আমাদের ছিলো যেই ছেলেবেলা হারিয়ে গিয়েছে অতীতে
শূন্য ও এক সব গিলে ফেলে ডিজিটালে মহা গতিতে।
এ কবিতাটাও মুঠোফোনে লেখা, তুমিও ফোনেই পড়বে,
এ যুগ কি আর কলেজ স্ট্রিট-কে আইকন বলে ধরবে?


আমাদের মতো যারা প্রায় বুড়ো, তারা বসে বই আগলাই,
আমাদেরই সাথে ফসিল হবে সে, আগামীতে তার ভাগ নাই।
বই-দিন বলে হইচই করে আবেগ খুঁচিয়ে তোলা ফের,
তুলনা যে তার প্রিয়জন কেউ মরে গেলে বকা প্রলাপের।


শুধু প্রজন্ম জানবে না স্মৃতি পাতাভাঁজে শুখা গোলাপের...


আর্যতীর্থ