।দোনোমনা।


আমি পুজো’র কথা লিখবো না রাষ্ট্রদ্রোহের কথা বলবো, ভীষণ ভাবছি।
কাশ-ঢাক-শিউলির নরম গল্পগুলো কথা দিয়ে সাজাতে বসে খবর পাচ্ছি,
কারা যেন বাপু’র ভস্মাধার চুরি করে লিখে গেছে তাঁর ছবিময়,
‘ রাষ্ট্রের শত্রু’ । যথারীতি এখনও অবধি কেউ গ্রেপ্তার নয়,
হলেই বা কি? যেভাবে পিটিয়ে মারা যুবকের ময়না’তে সুবৃহৎ ফাঁকি,
তেমনই ভাবে যদি তদন্ত হয়, তাহলে দেখা যাবে বছর বিশেক পরে,
পুলিশী বয়ান নয় খুব জোরদার। সন্দেহভাজনরা তাই ফিরে যাবে ঘরে,
তোড়া তোড়া গান্ধীরা হাসিমুখে ঝকমক করবেন বশংবদ সিন্দুকে,
‘কড়োড়ো রুপাইয়া’ আর সময়ের অপচয়ে অজ্ঞাত থেকে যাবে কোন হাত কালি দিলো বাপুজীর মুখে।


শহরের বুকজুড়ে আনন্দের ঘ্রাণ নেবো, না অনতিআগামীর আতঙ্কে মলিন হবো, সে দ্বিধায় আছি।
ওরা ও আমরা বলে নাগরিক বিভাজনে খেলা কানামাছি,
শেষ অবধি কাকে কাকে ছোঁবে,
নিকোনো উঠোন থেকে, চেনা মাঠঘাট থেকে সুদূর ডিটেনশনে কে পৌঁছোবে,
বোঝা দুষ্কর। কতটা সময় গেলে জন্মভূমিতে জোটে পাকাপাকি ঘর,
সে খবর কার কাছে আছে? তাকিয়ে দেখতে পাই আনাচেকানাচে,
ছোটোবেলা থেকে চেনা মানুষজনেরও দৃষ্টি বদলে গিয়ে ক্রমশ ঘোলাটে,
কে কতটা নাগরিক সে প্রমাণ দিতে দিতে, বন্ধু বিশেষ আর নেই তল্লাটে।


পুজোপরিক্রমা করে ফেসবুকে দেবো ছবি, বোসপুকুর, বাবুবাগান বা ত্রিধারা,
নাকি খোলা চিঠি কেন রাষ্ট্রদ্রোহিতা হবে সে কারণ ভেবে ভেবে হবো দিশেহারা,
বুঝতে পারিনা। ওঁরা তো মুখোশ ঢাকা জনতাকে তাক করা অস্ত্রধারী না,
সকলেই কৃতী, ঘটমানে স্বভাবত ভীতিতে যে আর্জি হয়েছে পেশ গণতান্ত্রিকতায়,
নি-জবাব সেই বয়ানের কথা ধরে কেউ যদি সন্ত্রাসী তকমা লাগায়,
তাহলে কোথায় যাবো? ক্ষোভ গিলে রেখে নামহীন মিছিলে হারাবো,
অথবা দেশের জন্য প্রয়োজনে রাষ্ট্রের বিপরীতে সপাটে দাঁড়াবো,
উত্তর চলেছি খুঁজে।আশেপাশে শিরদাঁড়া বেঁকে ক্রমশ যাচ্ছে  
বেড়ে কুঁজো,
সভয়ে দেখছি তাই ।
আশা করি ক্ষমা করে দেবে, যদি না লিখতে পারি কত আনন্দে ভরা এবারের পুজো।


আর্যতীর্থ