। একটা বাজে গল্প।


‘সব ঠিক হ্যায়!’মন্ত্রীর গর্জনে কেঁপে ওঠে সভা।
‘ঠিক আছে সব, শান্ত রয়েছে দেশ শবের মতন।
বাঁধ নিয়ে ব্যাঁকা কথা বলেছিলো যারা,
এইবারে দেখা যাক তাদের চেহারা, বলুক না মুখ ফুটে
এর চেয়ে শান্ত ও সুবোধ জনতা তারা দেখেছে কখনো আগে?
বুলি নয় , গুলি লাগে এ শান্তি পেতে,
এই দেখো ফুলিয়েছি পেশী,
দেশজ ভেষজ কে, কে বা বিদেশী,
লহমায় নির্ণয় করে, হিঁচড়িয়ে নিয়ে গেছি সব গুমঘরে,
সেই সব নিঃস্বরে ফের আবার ভাষা দিতে পারবে না কেউ,
শান্ত দিঘীর মতো এতটুকু কোনোখানে  নেই কোনো ঢেউ।
সব ঠিক হ্যায়! ‘
মন্ত্রীর মেঘস্বর গুরুগুরু বেজে ওঠে রাজার সভায়।


এক স্বর মিনমিন করে বলে ওঠে
‘ইয়ে, মানে.. যা আসে কানে, তেমন মিলছে না যে।
শুনেছি বন্ধ স্কুল, লোকজন যাচ্ছে না কাজে,
ও ভূমির নয় তাই কদিন আগেই খুন হলো কিছু লোক,
যেমনটি বলছেন, তেমন দেখে না কেন দুনিয়ার চোখ?’


‘কে বলে?’
মন্ত্রীর চোখদুটো ধকঝক জ্বলে,
‘কে সে অর্বাচীন, এখনও মানেনি যে এসেছে সুদিন?
ফের যদি বাধা আসে এমন ভাষণে,
পেয়াদা পাঠাবো, শ্বাস নিতে অনুমতি লাগবে শাসনে।
কে বলতে চায়?’


কেউ বলে না, শুধু দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর শ্বাস শোনা যায়।


মন্ত্রী বলেন ফের, ‘ যা বলছিলাম,
রাষ্ট্রের সম্মান হবে না নিলাম। যে যাবে বিরুদ্ধে তার ,
যে করবে অমান্য আমার কথার,
যেভাবেই হোক তাকে করাবো নীরব, দরকারে ঢেকে দেবো কাঁটাতারে সব।
আমি শান্তি চাই। আমি শান্ত চাই।
যদি কুলুপ আটতে হয় ট্যাঁ ফোঁ করে চলা সবকটা মুখে, তবে সই তাই।
মাথা নিচু করে যারা, বেঁচে থাকে সুখে,
রুখে দাঁড়ালেই যাবে কেউ বন্দুকে,
কেউ অন্য উপায় ধরে,
এ কথা স্পষ্ট বলি, ঘোরপ্যাঁচ নেই কোনো আমার ভিতরে।
যেমন এখন দেখো,
নড়েনা কারোর জিভ, সরেনা কলম,
সব ঠিক হ্যায়! উত্তর দক্ষিণ পূর্ব বা পশ্চিম,
দেশে আছে সবকিছু ঠিক একদম।’


হাততালি! হাততালি!  সকলে দাঁড়ায উঠে , সোল্লাসে হাসি ফোটে রাজার সভায়!


হঠাৎ পাগল এক, পাগলেরই মতো করে তিনরঙা পতাকা নাড়ায়।
সে পতাকা বুকে করে চিৎকারে লাগালো সে রাজপথে ছুট,
‘ সব হ্যায় ঝুট, সব হ্যায় ঝুউউউউট...’


একটা গুলির শব্দ, মসমস হেঁটে যায় মিলিটারি বুট..


আর্যতীর্থ