। গোলাপ।


বয়েসকালের প্রেমের কথা ভাই খুলে আর বলবো কি
আগে দিতাম রাইকে গোলাপ, এখন আনি ফুলকপি।
জীবন রোজের চাঁদায় এখন ইচ্ছেমাফিক বিল কাটে,
চুম্বন আর বাদবাকি সব সাইবেরিয়ায় জেল খাটে,
মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা ধরতে পারো বিগ জিরো,
সরস্বতী কিংবা ভি ডে, নেই কোনো দাম একটিরও।
এক শুধু ওই বার্ষিকীতেই কয়েক সিকের চু কিত কিত
ক্যাবলা হাসা যুগল ছবি, তার বেশি আর নেই পিরিত।


তাই বলে কি প্রেম ছিলোনা কলেজকালের চিরকুটে?
একটা গোলাপ স্মৃতির ভেতর টাটকা আজও রয় ফুটে।
ঝকমকে সেই অতীত ঢাকা বর্তমানের শুক্তিতে,
পেছনপানে চাইলে পারে শীতল হওয়ার সুখ দিতে।
এখন কেমন ডিজিটালে ইমোজিদের বান ডাকে,
সকাল বিকেল ঘুটুর ঘুটুর না করলে কি মান থাকে
সেসব কালে মায়ের নজর, পাড়ার লোকও চৌকিদার
এড়িয়ে তাকে কোথায় যাবে আমার হবু বৌটি আর,
প্রেম করেছেন এটাই মহা দোষের মধ্যে গণ্য হয়,
জেনেই বাপের  থমথমে মুখ, পাত্র বুঝি অন্য হয়!
সব মেয়েরাই রাজকুমারী, বাবার প্রিয় যখের ধন,
তাকান এমন হবু শ্বশুর, যেন আমি দুঃশাসন,
মাইনে কত, বাড়িতে কে ইত্যাদি সব জেরার পর,
নিমরাজী হন কায়ক্লেশে রাই পাঠাতে আমার ঘর,
শ্মশ্রুমাতাও অশ্রু মুছে জাহির করেন অ্যাপ্রুভাল
দেখতে পেলাম পর্দা নড়ে, রাইয়ের চুড়ি তার আড়াল।
পর্দাফাঁকে চোখবিনিময়, হালকা নজর বোঝাই দায়
রাই ইশারায় বলেন আমায়, জলদি এসো বারান্দায়।


সময় রাধা কৃষ্ণচূড়ার, কদিন আগেই দোল গেছে
বিকেল বেলার রৌদ্র লেগে গাছ গোপীতে বদলেছে।
রাই দাঁড়িয়ে বারান্দাতে  লাল হলুদের প্রেক্ষাপট,
আমৃত্যুকাল থাকবে মনে সময় নিলো যে ফ্রিজশট।
বোকার মতো ভেবলে গিয়ে কি বলবো ছাই ভাবছি তা
লুকিয়ে এত বকমবকম, আজ যে কেন পারছি না!
বুকের ভেতর ধুকের দাপট, মুখে ছড়ায় কি উত্তাপ,
হঠাৎ হেসে রাইকিশোরী, বাড়িয়ে দিলেন লাল গোলাপ।
বাড়ি ফিরে সে ফুলটাকে, নয় কোটি বার বোলাই হাত
গীতাঞ্জলির আঠাশ পাতায়, সামলে রাখেন রবীন্দ্রনাথ।


আজকে আমার ফুলকপি ডে, গোলাপ দিবস অন্যদের
রান্নাঘরের থেকে এখন পাচ্ছি বড়ার গন্ধ টের।
রাই ডাকবার আগেই দেখি ঝুরঝুরে এক গীতাঞ্জলি,
আঠাশপাতায় থমকে আছে তেইশ বছর গোলাপ কলি।


আর্যতীর্থ