। ঈশ্বরের আগে।


জুরাসিক যুগ। এতটা স্থবির নয় তখনও পৃথিবী।
হিমালয় ছোটোখাটো পাথুরিলা ঢিবি,
নদীরা বাধ্য নয়, দিক পাল্টিয়ে ফেলে খেয়ালের বশে, মেঘছোঁয়া গাছডালে রোজ টেরোডাক্টিল ডানা মুড়ে বসে অভাগা ডায়নোসরি মাংস চেবায়।
নিচে মাঝে মাঝে এসে টিরানোসরাস রেক্স গাছ আঁচড়ায়।


অস্থির ভূমিতে ব্রন্টোসরাসের এক শিশু বড় হয়।
মা বাপ মস্ত বড়, টলোমলো পায়ে চলে তাদের নকলে সে সড়গড় হয়।
চিনে গেছে কোনখানে মৃত্যু লুকিয়ে, চোরাবালি কোনখানে চুপচাপ পড়ে থাকে সব গিলে নিয়ে,
কোন গাছে স্বাদু পাতা, কোথায় কাঁটার বিষে জ্বালা ধরে জিভে, কোথায় জ্বালামুখী নিভে গিয়ে হ্রদ হয়ে গেছে,
সব তার জানা।
তবে তাকে বড় টানে টিমটিম তারাভরা রাতের আকাশখানা।


ছোটো মনে নানবিধ প্রশ্নও আসে।
মা যখন মুখ দেয় অতিকায় ঘাসে, তখন সে পিছুপিছু নানা কথা বলে তার ব্রন্টো ভাষায়
( বিজ্ঞান নয় এটা, কল্পকাহিনী, কিছু মিছেকথা হলে কি আসে যায়!)
রাত আকাশে সে যখন তারাদের দেখে,
নদী ও পাহাড় থেকে অদ্ভুত শব্দেরা আঁধারকে কত রূপ দেয় , আদিম বাতাস মেখে অধুনা লুপ্ত ফুল,তার নাকে রাতভর সুবাস ছড়ায়।


একদিন বাপ মা কে ডেকে, খুদেটা ব্যক্ত করে তার এক সওয়াল,
এই তারা, ওই নদী.  টিরানোসরাস আর টেরোডাক্টিলপাল কার সৃষ্টি,
কেউ কি আছেন নাকি সব কিছু ঘটমানে যার দৃষ্টি?
সংক্ষেপে, কেউ কি আছেন যার নাম ভগবান?


ডাইনো বাবা হেসে মা’র দিকে চান,
তারপর বলে যান ব্রন্টো ভাষায়,’ বাচ্চা তোমার দেখি বড় দ্রুত ভাবীকালে যায়। ‘
তারপর  খুদেটাকে মৃদু ঠেলা দিয়ে কন’ এত তাড়াতাড়ি কেন ঈশ্বর নিয়ে উন্মুখ?


এখনো জন্মাননি তিনি, তাঁকে যে বানাবে, আগামীতে আগে তো সে মানুষ আসুক!’


আর্যতীর্থ