। ঈশ্বর আর ঠাকুর।


অবিশ্বাসী নই আমি , অচলা ভক্তিতে আছি ঈশ্বরব্রতে,
যুগ যত ধমকিয়ে চমকিয়ে আদেশ করেন চির- নিঃস্বর হতে,
তত আমি আঁকড়িয়ে ধরে থাকি তাঁকে।অমরাতে নন,
শেকল বাঁধন ছিঁড়ে আলোকিত হোক সব মানুষের মন,
সে দায়িত্ব ক্রুশের মতন বয়ে গিয়েছেন একা তাঁর কাঁধে
স্বখাত সলিলে ডোবা এই দেশেতেই। যে অলঙ্ঘ্য বাঁধে
ক্ষয়িষ্ণু লোকাচার সময় আটকে রাখে অতীতের পাঁকে,
একা তার ভিত ভেঙে দিয়ে তছনছে যুক্তির কালবৈশাখে,
আমার ঈশ্বর খুলে দেন স্বপ্নের দিকে বওয়া আগামীর মুখ,
অধরা অলৌকিক অজুহাতে করা মানবিক যত ভুলচুক,
সেই সব থেকে দূরে, শুধু মানুষের জন্য যান যেই সিঁড়ি গড়ে,
তা বেয়ে উঠলে একদিন পৌঁছাবো ঠিক সেই আগামী মিনারে,
যেখানে দেবতার পূজা নয়, মুখ্য মানুষের প্রয়োজন বোঝা,
মন্দির মসজিদ গির্জা দেখিনি, বিদ্যাসাগরে শেষ ঈশ্বর খোঁজা..


ঠাকুরের পুজো করি রোজ , তবে বিল্বপত্রপুষ্পধূপ নেই তাতে,
এই অতিবৈষয়িক যুগে, লাভক্ষতি পার করে ঘা দিয়ে নিদ্রালু চেতনাতে,
একলা চলতে ডাকে তাঁর কবিতা, সাড়া দিই, সাড়া দিতে হয়,
সব আঘাতের থেকে উঠে আসা যায়, ক্ষত হয় আশু নিরাময়
তাঁর গানে, জীবনের সংকেত লেখা থাকে পংক্তির দিকনির্দেশে,
পান্থজীবন জুড়ে বিপদেআপদে, অ-বন্ধু দ্বেষে জ্বলা যাপনের ক্লেশে,
তাঁর বাণী অমৃত হয়ে রোজ ভরসা যোগায়।যে সব পথিক,
অন্ধ আঁধারে ভুলে গোলোকধাঁধায় ঘুরে হারিয়েছে দিক,
তাদের ক্লান্ত পাখা বন্ধ হয়না তবু, তাঁকে ছুঁয়ে আশা জেগে থাকে ,
রবীন্দ্র ছেড়ে তাই আর কোনো ঠাকুরের কথা কেউ বোলো না আমাকে...


আর্যতীর্থ