।ঝনঝন।


বছরশুরুর ছুটির দিনে ছিলাম ভারী ফূর্তিতে,
ব্যস্ত ছিলাম রবির গানে নিজস্ব সব সুর দিতে
হঠাৎ কেমন আওয়াজ হলো পাশেই কোথাও.. ঝনঝনাত
আমেজ ভেঙে দৌড় লাগালাম শব্দভেদে তৎক্ষনাৎ।


রান্নাঘরে রাইকিশোরী থাকেন জানি এই সময়,
রন্ধন তাঁর বিলাসব্যসন, সকালটি তাই বাসনময়।
আজকে নতুন খাদ্য কিছু পড়বে জানি ঠিক পাতে,
( পাঠিকাগণ, হাসতে বারণ ভুঁড়ির দিকে দৃকপাতে)।


সেইদিকেতেই পা বাড়ালাম দুর্ঘটনার আশঙ্কায়,
স্লিপ করেছেন নির্ঘাত রাই চারদিকে তাই বাসন ধায়।
রান্নাঘরে গিয়ে দেখি বাসন আছে জায়গাতে,
রাই মেতে রন নির্বিকারে খুন্তিনাড়ন কায়দাতে।


আমায় দেখে বলেন রাণী, জাঁহাপনা হঠাৎ যে?
ফরমায়েসি ছাড়া তো আর পা পড়েনা এ রাজ্যে।
বাঁদীর প্রতি হুকুম এখন চায়ের নাকি ব্ল্যাক কফি?
হেসে বলি, যা দেবে দাও, সাথে মধুর বাক্য ফ্রি।


কিন্তু প্রিয়ে , একটু আগে আওয়াজ হলো ঝনাত ঝন,
এত বিকট , যেন তোমার পড়লো পায়ে সব বাসন।
ভাবলে বাঁদী হতাম কি আর ব্যস্ত  যেমন আজ হলাম,
হায় বিবিজান, বুঝবে কবে, বান্দা তোমার খাস গোলাম।


রাই বললেন তোমার অমন তেল মারা থাক কাব্যতেই,
বাধ্য পথে চলবে তুমি, আমার অত ভাগ্য নেই।
বয়েস হয়ে কানটা গেছে, সাথে বোধহয় মগজটাও,
বাসন তো সব দিব্যি আছে, কোথা থেকে আওয়াজ পাও?


বলতে বলতে পাশের ঘরের সে ঝনঝনি বিষম জোর,
নির্ঘাত আজ সিঁদ কেটেছে আনাড়ি এক বাসনচোর।
কাজের লোকে মাঝে মাঝে ভেজিয়ে পালায় দোরটাকে
হয়তো সেটাই সুযোগ দিলো সন্ধানী এই চোরটাকে।


দুজন মিলে জলদি গেলাম ,রাইয়ের হাতে বেলনা-টা,
আমার মুঠোয় আদ্যিকালের দাদুর লাঠি তেলমাখা।
মিথ্যে কথা বলবোনা ভাই, ভয়ে তবু গিলছি ঢোঁক,
গিয়ে দেখি... গুনগুনিয়ে মুছছে সে ঘর কাজের লোক।


হঠাৎ বিষম চমকে দিয়ে আবার বাসন ঝনঝনি!
বোঝা গেলো আসলে তা বিশুর মায়ের রিঙটোনই।


আর্যতীর্থ