।জুটি।


গরম সেদিন কিছু কম ছিলো,
প্রেম বেশি কিছু দু-মনে,
ঘড়ির কাঁটারা যেন দম নিলো,
কাজ-তাড়াহীন দুজনে।


মুঠোফোনে নেট ছিলো নিষ্ক্রিয়
রাই-য়ের হুকুম মতো,
‘কথা বলবার সময় তাকিও
ফোন থেকে অন্তত’।


সঘন প্রেমের এমন আবহাওয়া
বহুকাল মেলেনা,
আহা ঘন ঘন যেতো যদি পাওয়া
রাই আর গরম চা!


চায়েতে চুমুক দিতে দিতে ভাবি
সুন্দরী গেলো কই
চুমুকের ‘ক’ বাদ দেওয়া দাবী
আমি আজ করবোই।


রাই ঢুকলেন নিজের মেজাজে
বসলেন পাশে  সোফাতে,
গৃহিণীটি যেন বিনোদিনী সাজে
জুঁইফুল এলোখোপাতে।


পাশে ঘেঁষবার প্রয়াসটি জারি
প্রগলভ হলে দোষ নেই
হঠাৎই ভাঙলো সুখের খোয়ারি
বেমওকা ধাওয়া প্রশ্নেই।


‘নজরে দেখছি চেনা পাগলামি
বয়েসের কথা ভুলো না,
বলো দেখি এই তুমি আর আমি,
কার সাথে হবে তুলনা?’


আমি বলি ‘আরে বলে তো সবাই
নিজে আর কি যে বলি
তুমি রাধা, আমি তোমার কানাই
সে কথাই মেনে চলি।’


শ্রীমতী বলেন মুখটি বেঁকিয়ে
( ভঙ্গীতে যাই মরে)
‘কখনো ওদের হয়নি তো বিয়ে,
‘আমরা’ কেমন করে?’


বললাম ‘যদি তাই দেখে যাও
প্রেমের কাহিনী খুঁড়ে,
এদেশে ওদেশে যেদিকে তাকাও
বিয়ে থেকে তারা দূরে।’


রাই বললেন ‘সুতরাং ভাবো
আরো যেটা হবে যুতসই,
নেট যে বন্ধ, কি করে খোঁচাবো
জবাবের খোঁজে মুখবই!’


কিছুখন দেখে সুন্দরী কন,
‘পারবে না জানি, ছাড়ো,
মোটেই শোনোনি বলেছি যখন
ভাবা প্র্যাকটিস করো।’


চোখের সামনে ইগোকে মাড়িয়ে
গিন্নীটি দেন গুঁতো,
আচমকা বলি গলা খাঁকরিয়ে
‘আমরা হলাম জুতো।’


শুনেই তো রাই রেগে হন কাঁই
‘আর কিছু পেলে না কি?
এইটা শোনাই বাকি ছিলো ছাই,
হায় কার সাথে থাকি!’


আমি বলি ‘প্রিয়ে, মন দিয়ে শোনো
খামোখা হচ্ছো ক্রুদ্ধ
ব্যাখ্যা আমার দিইনি এখনো,
তার আগে শুরু যুদ্ধ।


জুতো সর্বদা একজোড়া থাকে
একসাথে যায় ভ্রমণে,
দেখেছে পাদুকা বলো একলা কে
জোড়ে আসে তারা স্মরণে


একপাটি যদি ছেঁড়ে বা হারায়,
বাতিল অন্যপাটিটাও ,
যত জুটি আসে তোমার মাথায়
বলো এর থেকে খাঁটি পাও?’


রাই হেসে বলে ‘কালি হাড় মাস
লোকটাকে বিয়ে করে!’
হাসির সুযোগে দেখে চারপাশ
ঘন হয়ে আসি সরে।


মোটে বলবো না যত করো আশ
কি হলো তারপরে।


আর্যতীর্থ