। কালীপুজো।


আজ সবাই মিলে একটা কালো মেয়েকে মা বলে ডাকবে।
উপোস করবে, অঞ্জলি দেবে , বিবিধ উপাচারে নিবেদন করবে অন্তরে বয়ে যাওয়া মনের বাসনা,
‘ মেয়ে হলে রঙ দিও মা গো কাঁচা সোনা, সংসারে বধূ এলে
ঘরে ও বাইরে সে যতই নিপুণা হোক, দোহাই বর্ণ তার কালো দিও না।’


আজ সবাই মিলে এক নির্বসনা নারীকে ভক্তিভরে দেখবে।
ঠোঁটের কোণের লালা লুকিয়ে কেউ বাঁকা ভাবে বলবে না,
‘ মহিলার পোশাক ঠিক নেই, ধর্ষিতা হলে পুরুষের নেই দায়’
অবশ্য সাষ্টাঙ্গে প্রণিপাত সেরে, মন্ডপের বাইরে অবৈধ  দৃষ্টিপাত জারি থেকে যায়,
মানসিক স্ট্রিপটিজ এই দেশে ভারী প্রিয় খেলা, তফাত হয়না মোটে স্কার্ট বোরখায়।


সকলে মিলে আজ এক রমণীকে স্তব করবে অসুরদলনী বলে,
তাঁর মূর্তির গায়ে ঝোলাবে মুন্ডমালা সহস্র অত্যাচারীর  ।
আর ওই  ঝিকিমিকি আলোর মালার ঠিক বাইরেই মাতাল পুরুষের টোন কাটা থেকে বাঁচতে মুখ নিচু করে পা দ্রুত চলবে হাজার নারীর,
বাসে ট্রামে স্থাণু দর্শকের  ভিড়ে অসুরেরা ইচ্ছেমতন ছোঁবে কিশোরীশরীর।


আজ সকলে মিলে শায়িত পুরুষকারের ওপর এক নারীর অদম্য গতির কাছে মাথা নত করবে, মন্ত্রোচ্চারণে রক্ষার ভিক্ষে চাইবে তাঁর থেকে।
অথচ কয়েক রাজ্য দূরেই পুরুষ ভক্তরা ভগবানকে রক্ষা করছেন ঋতুমতী ছেঁকে,
অথচ এদেশ ক্লান্ত হলো রক্ষক পুরুষের হাতে বারবার বালিকার ধর্ষণ দেখে।


কত ফাঁপা আমাদের কালো মেয়ে আরাধনা, মনে মনে কমবেশি জানি প্রত্যেকে।


আর্যতীর্থ