। মৃত্যুর পরে।


মৃত্যুতে ভয় নেই, মৃদু ভয় মরণের পরবর্তীতে,
ভাবনারা ঘুরে আসে ওইখানে প্রতি চরকিতে,
কি বিপদ বলো! ধরা যাক পরলোক নেই,
( ভগবানহীন আমি বেশি বাজি ধরেছি তাতেই)
তবে তো আপদ গেলো।গোটা দেহ দান করা আছে ,
হৃৎপিন্ড যকৃৎ চোখ ও কিডনি নিয়ে যেইটুকু বাঁচে,
ছাত্ররা কেটেকুটে দেখে নেবে বাকি সব শব ব্যবচ্ছেদে,
আশা করি মেয়েরাও উঠবে না বাপ শোকে ডুকরিয়ে কেঁদে,
কঙ্কালটা তখন অ্যানাটমি হলে দুলে হাওয়া খাবে রোজ
পরকাল না থাকলে মৃত্যুর ঠিক পরে আর্য নিখোঁজ।


কিন্তু মরার পরে আত্মার অস্তিত্ব যদি থাকে দেহ বিনা,
অনন্তকাল তবে ভূত হয়ে পস্তাবো ছেড়ে খানা পিনা।
শ্রাদ্ধ বলতে তো য’বছর আয়ু ছিলো ততগুলো গাছ
অঙ্গরা ধুকপুক তখনো নানান দেহে আনাচ কানাচ,
তার ওপরে কঙ্কালও তরুণী ছাত্রীদের রোজ দেখা পায়
( এমন ভাগ্য হলে মাইরি স্বর্গবাস কোন বোকা চায়)
যদিও যমরাজ এমন অধার্মিক ঢুকতে দিতেননা স্বর্গে
নরকও তথৈবচ, আদেশ আসতো যা ভূত হয়ে ঘোর গে,
হয়তো তখন প্রেত চুপিসারে পৌঁছিয়ে তোমার আঙনে
নতুন শব্দবিদ কেমন বাঁধেন কথা চুপ করে শোনে..


ভয়টা সেখানে না। ভূত হলে হবো, ক্ষতি নেই তাতে,
বিদেহী ভোগে না শুনি রোজকার না পাওয়ার যন্ত্রণাতে।
ভয় একটাই, মৃত্যুর দরজা খুলে যদি দেখি চোখের পলকে
পৌঁছিয়ে গেছি এক আয়ুহীন ক্ষয়হীন অনন্ত নরকে,
যার দ্বারে ঈশ্বর বসে। স্মিত হেসে করে মৃদু অভ্যর্থনা
বলেন স্রষ্টা যদি ‘এসে গেছো, যাও ভোগ করো যন্ত্রণা,
যেমন বিধান ছিলো। যাওয়ার আগে শুধু বলে যাও শেষ,
দেহ উপহার দিয়ে পাঠালাম যেখানে, কেমন সে স্বর্গের দেশ?
আশা করি দিনপাত করেছো আনন্দে, প্রতি ক্ষণ খুব ভালোবেসে?
সে সুখ পাথেয় হবে কষ্টে এখন, এ অনন্ত নরকের দেশে।


প্রতিদিন ভয় করে, মৃত্যুর পরে যদি জানি বুঝিইনি স্বর্গতে এসে।


আর্যতীর্থ