। নিকেশ হিসেব।


চুপিচুপি ঢুকছে যারা,
রুপি’র টুপি পরিয়ে দিয়ে সঠিক মাথায়,
ওঠাচ্ছে নাম ভোটের খাতায়,
রেশন কার্ড আর আধার পাওয়া তাদের কাছে
সহজ অতি; এটুক তোমায় বলতে পারি ,
তাদের হাতে তৈরী নথি,
দেখিয়ে দেবে বাস রয়েছে শায়েস্তা খাঁ-র আমল থেকে;
যতই মরুক পঞ্জীওয়ালা মানুষ ধরার ছাঁকনি ছেঁকে,
পারবে না সে।
লালফিতেদের ভেতর থেকে ঘুষের ঢেঁকুর গন্ধ আসে,
ঠিক হাত-পায়ে তেল পানিতে
লোকদেখানি নিয়ম ফুঁড়ে
ঝকঝকে সব নথিতে খুব সরল গতি,
পঞ্জীওয়ালার কঠিন মুঠোর ফাঁকফোকরে
বেরোয় তারা বিনা ক্ষতি।


কিন্তু যারা নিজের ঘরে হন যাযাবর,
পেট-তাগিদে দারুণ খিদে তাড়িয়ে বেড়ায়,
আকাশকুসুম একখানি নীড় বেড়ার ঘেরায় পান না তাঁরা, পেটের তাড়ায় ছুটতে থাকেন ভীষণ জোরে,
প্রজন্মদের ঠাঁইবদলে
শিকড়ে তাই রস জমেনা তেমন করে।
এঁদের কাছে চাইলে নথি,
চোখের নজর অধোগতি,
বাবা ছিলেন এক প্রদেশে, ঠাকুর্দা কোন আন-মুলুকে,
সুলক সেটার লেখা শুধু গল্পগাছায়।
পঞ্জীওয়ালার থাবা যখন
বাবার বাবা তস্য বাবার সন্ধান চায়,
এঁদের কাছে প্রমাণস্বরূপ কিচ্ছুটি নেই,
ক্রমাগত চলতে গিয়ে,
কখন যে কি যায় হারিয়ে,
পড়বে ধরা এবার সেসব বিচ্যুতিতেই।


এবং যারা নদীর পাশে,
আবাদ-চাষে মন ঢেলে দেন,
শ্রমের ঘামটি উপুড় করে ফসল ফলান,
নদীর হঠাৎ গোঁসা হলে,
সবখাকি সেই ফোঁসা জলের থেকে পালান,
বানভাসি সেই মানুষগুলোর কি হবে রে?
জল নিয়েছে সবই কেড়ে, প্রাণটুকু বাদ,
নিত্য বে-ছাদ তাদের কাছে খুঁজবে কি কার্ড?
কেউ জানেনা,
শেকড় থাকার প্রমাণ নিয়ে রাখলো নদী কোন পলিতে..


তাদেরও কি দেশের থেকে করবে নিকেশ এন আর সি-তে?


আর্যতীর্থ