। ওরা সাতজন।


সে কিশোর অন্য দলের, যার সাথে এদলের যুদ্ধ।
সে কিশোর অন্য পাড়াতে, যে সময় সকলেই ক্রুদ্ধ।
সে কিশোর নিরস্ত্র, ক্লান্ত ও দিশাহীন, হয়তো কিছুটা উদভ্রান্ত,
সে কিশোর ফিরে যেতো, শুধু যদি বেরোবার পথটুকু জানতো।
এখন ঘিরেছে তাকে বেপাড়াতে এক দুই তিন করে সাতখানা লোক,
নিস্তার নেই আর, বিস্তার হিংসার, খুন চায় সাতজোড়া খুনরঙা চোখ।


দুজন প্রবীণ এই অসম হত্যাকাণ্ডে প্রবলের দলে,
দুজন প্রবীণ, বস্তুত যাদেরকে দুদিকেরই বলা চলে
দুজন প্রবীণ, যারা ওই কিশোরকে জন্মাতে দেখেছেন রীতিমতো,
দুজন প্রবীণ, এ সময়ে বিপরীতে কণ্ঠ উঠালে যারা যুগ ভালো হতো,
নামে কি বা এসে যায়, কৃপ দ্রোণ, আব্দুল রফিক বা রতন পরান,
মোটমাট, দুজন প্রাজ্ঞ লোক, ভিড়ের থাকতে সাথে হন শয়তান।


একজন কিশোরেরই বংশজ বটে, তবে আজ বিপরীতে স্থিতি।
একজন ওদলে গিয়েছে চলে বলে, মানে না এ তারই সন্ততি।
একজন ভয়ানক রেগে ওর বাপের ওপরে, ক্ষমতার চেনা বিভাজনে,
একজন কিশোরের বয়েস দেখে না, ওকেও শত্রু বলে গোনে।
কর্ণ বা বিভীষণ, জাফর ঔরঙ্গজেব , হালের পাল্টি খাওয়া নেতা,
সকলের ধারণায় হত্যা বিবেচ্য নয়, আসল লক্ষ্য হলো জেতা।


আরো দুইজন স্রেফ বন্ধুস্থানীয়, হোতাদের সাথী নিয়মিত
আরো দুইজনই জানে কিশোরের ঘর তার ক্ষতি করেনি তো।
আরো দুইজন তবু, নেতা যা নির্দেশ দেন সেটা করে প্রশ্নবিহীন,
আরো দুইজন ভারী চেনা সৈনিক,ঝামেলায় দেখা যায় যে কোনোদিন।
অশ্বত্থামা কৃতবর্মাই ডাকো, কিংবা দাদা বা দিদির কোনো ভাই,
এখানে মগজের ব্যবহার নেই। কিশোর হলো তো কি, হবে হত্যাই।


বাকি দুইজনই শুধু বিরোধীর মৃত্যুপিপাসু, হোক না তা কিশোরের লাশ,
বাকি দুইজনই ভাবে শত্রুশিবিরে হওয়া প্রতি শোক আনে উল্লাস।
বাকি দুইজন এই ধ্বংসের মূল হোতা, সব হত্যায় আছে সায়,
বাকি দুইজন জানে, যে জেতে, ইতিহাসে নেই তার কোনো অন্যায়।
শকুনি দুর্যোধন, হিটলার মুসোলিনি, অথবা অন্য কোনো জুটি,
যুদ্ধতে জয় পেতে দ্বিধাহীন কাটে তারা যে কোনো কিশোরের টুঁটি।


ওরা জড়ো করে ফেলে গোটা পাঁচ হাতের পুতুল।কাউকে ক্ষমতা দিয়ে , কাউকে বা রুটি।


অভিমন্যুর লাশে অত ক্ষতদাগ দেখে আমরাও নিয়মিত চমকিয়ে উঠি।


আর্যতীর্থ