।রাজনর্তকী।


নূপুর বাঁধো তাজ, অভ্যাগতরা আসছেন।
সন্ধ্যার সূর্যের রক্তাভ প্রেক্ষাপটে তোমার মোহিনী  সম্মোহনে মজেনি এমন পুরুষ নেই,
আজ ভিনদেশী সম্রাট আসছেন রাজার সঙ্গে,
দেখো যেন লাস্যে কার্পণ্য কোরো না।
তুমি নাচবে বলে যমুনায় বয়ে গেলো কোটি কলস স্ফটিকস্বচ্ছ জল,
যেন তোমার প্রতিবিম্ব সেখানে অলোকসামান্য সেলফির মতো ফুটে ওঠে।
তোমার গ্রীবাভঙ্গিমায় পাগল করো সম্রাটকে,
তোমার শ্বেতকাঁচুলির হিল্লোল অনাস্বাদিত আশ্লেষ এনে দিক রাজকীয় রিপুর বাগানে,
তোমার প্রতি মুহূর্তের বিভঙ্গবদল দেখে  আবেশের আহ্লাদে সম্রাট আত্মহারা হোন।
তারপরে রাজা  তাঁর থেকে চেয়ে নেবেন,
কোটি স্বর্ণমুদ্রার প্রতিশ্রুতির বেলুন,
বিশ্বনষ্ট করা পাশুপত অস্ত্রের গোপন সংকেত,
অথবা অলীক স্বপ্ন দেখানোর কায়দাকানুন।


সুন্দরী সবরমতি সম্রাটকে বরণ করতে এগিয়ে আসেনি,
একদিকে ভালোই হয়েছে,
ছলাকলা ও বশীকরণ বিদ্যা তার আয়ত্ত্বে কখনো ছিলোনা।
খাদি আদি হতে পারে, সময়ের দাবীতে সে ধরে নাও বাদই,
তবুও গর্ব দেখো, সে কখনো রাজাদের বাঁদী হবে না।
তুমি তো তা নও তাজ, যুগে যুগে মসনদি অহংকার তুমি,
যেমন গর্ব থাকে শ্রেষ্ঠ সুন্দরীটি রাজনর্তকী হলে,
কত পূর্ণিমা রাত , কত সূর্যডোবা ক্ষণ কেটেছে তোমার নানা রাজার দখলে, ইয়ত্তা নেই।
আজ তাই, আরো একবার, ঘুঙুর শানিয়ে নিয়ে
এত মোহময়ী হয়ে ওঠো  মনোরঞ্জনে ,
উর্বশী মেনকা রম্ভা নৃত্য থামিয়ে দিক স্তম্ভিত সম্ভ্রমে,
আসর উঠুক জমে রাজকীয় আমোদ প্রমোদে।


আমরাও সুখ মেখে তোষকে অভাব ঢেকে মন দিই প্রাণপণ রাজকর শোধে।


আর্যতীর্থ