।সমালোচনা।


কবিতা পড়ে যদি সমালোচনা নাই হলো,
যদি দুচারজন ব্যাঙ্গে মুখ না বেঁকালো
তাহলে বুঝতে হবে কোথাও গোলমাল আছে,
সে কবিতা তেমনভাবে পৌঁছায়নি পাঠকের কাছে।
কবিতা লেখেন কবি নিজস্ব আবেগে,
যে ভাবনারা কবিতায় আদিগন্ত লেগে,
তারা যেন প্রাণ পায়, শব্দপ্রলেপে,
সেজে ওঠে ছন্দের নানা রঙ মেখে।
সে অর্থে  কবিতারা কবির সন্তানের  মত,
সমালোচনায় হোক ক্ষতবিক্ষত তাঁর কবিতা,
কি করে মানবে বলো কোনো কবি তা?
সব কবিই সমালোচকদের বেজায় অপছন্দ করেন,
কষ্টে ভেবে শব্দমালা তবে তাঁরা ছন্দে ভরেন,
কোথাকার এক উটকো আপদ এসে তাকে পোড়াবে,
তাচ্ছিল্যের ধিক্কারে এক ফুঁয়ে ওড়াবে,
সেটা স্বয়ং রবিঠাকুরেরই সহ্য হয়নি, আর বাকিরা তো ছার!
অথচ, শিল্পের প্রয়োজনে, কটুকথা শোনাটাও বড় দরকার।
হয়তো তাদের বেশ কিছু ঈর্ষাপ্রসূত বিদ্রুপখোঁচা,
যেটা নিজে পারিনা, বড্ড সহজ তাকে বলে দেওয়া ওঁচা,
সেটাই মানবচরিত।তাই বলে সব বিরুদ্ধ কথা ধ্বংসাত্মক নয়,
নতুন আলোর দিশা আঁধারে লুকিয়ে থাকে অনেক সময়।
চেনা বৃত্তে বাহবা পেয়ে  কবিতারা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে,
যে সব শব্দ এসে মনকে নাড়িয়ে দেয় বিধিভাঙা ঝড়ে,
সেসব লিখতে গিয়ে কলম থামিয়ে কবি পড়েন দ্বিধায়,
তাৎক্ষণিক বাহবারা না এলে তখন তাঁর বড় আসে যায়।  
তাই, কবিতার মহীরুহ করতে হলে ভাবনার চারাকে,
সমালোচনার বিষে জ্বলতে দিতে হবে তাকে,
মুড়লে হবে না তাকে চেনালোকের প্রশংসার মোড়কে,
না কাটলে আসে না দ্যুতি কোনো হীরকে।


আর্যতীর্থ