। সমাসবদ্ধ।


খুব মুশকিলে পড়েছি ,সুনীতিবাবু।
ব্যাকরণের সমাস আর সন্ধিগুলোর অভিসন্ধি বুঝতে পারছিনা আর।
এই সব নতুন কথাগুলোর কথা তো আপনি কোথাও শেখাননি।


ঈশ্বরের সাথে এখন ভয় কথাটা জুড়ে গেছে।
আমি যদি জোরে ঈশ্বর বলে চেঁচাই, তাহলে সব লোক আমার দিকে ঘুরে তাকাবে,
তারপরে পেয়াদা এসে জানতে চাইবে ‘ কাদের ঈশ্বরের খোঁজ করছেন মশাই?’
ভুল ভগবানের নাম বললে আগে ফাটকে নিতো, এখন সীমান্তপার।
আপনিই বলুন, ওই লেজুড় ভয়টা কি দ্বন্দ্ব নাকি মধ্যপদলোপী?
মানে, মধ্যপদ দিয়েই তো বিবেচনা.. হেঁ হেঁ।
অথচ কি অদ্ভুত জানেন, ওদের একজনও ঈশ্বর বললে বিদ্যাসাগর বুঝবে না।
এত সহজ সরল তৎপুরুষ, তবুও।


ভালোবাসা আর জেহাদ কি দ্বন্দ্ব সমাস, সুনীতিবাবু?
নাকি কর্মধারয়, পরের কথাটাই মুখ্য?
অথবা বহুব্রীহি, দুটো মিলে সম্পূর্ণ আলাদা এক অনর্থের সৃষ্টি করেছে?
ঠিক বুঝতে পারিনা, আসলে মাধ্যমিকেও সমাসটা ঠিক..
আমাদের সময় তো ভালোবাসার সাথে বিচ্ছেদ বা মিলন বসতো,
যুদ্ধের হুংকার দিয়ে ব্যাসবাক্য রচনা হয়নি কখনো।
এখন কি নিয়ম আলাদা?
অবশ্য, শব্দরা তো বদলাচ্ছে,
সোনালী সুদিন বললে আকাশকুসুমের কথা মনে পড়ে,
হাস্যকৌতুক অর্থে অভিধানে স্থান পাবে, গুজব শুনেছি।
সমাসেরাও তাই আর সোজা পথে যায়না।
দুটো মনের মিলন যে ভালোবাসা,
বিগ্রহ আর অ-বিগ্রহের দ্বন্দ্বে সে বিগ্রহবাক্য বিগড়িয়ে গেছে।


ব্যা- করনই যেখানে প্রথা,
সেখানে প্রচলিত ব্যাকরণে কিছু আর্ষপ্রয়োগ তো হবেই, সুনীতিবাবু।
মেনে নিন। যেমন মেনেছে সবাই।


আর্যতীর্থ