। সে আসেনা।


সেদিনের পর থেকে, ট্রামের ঘন্টা আর ছন্দে বাজেনা।
কারশেডে ফিরে রোজ চাকাগুলো সন্তর্পণে দেখে, রক্তের দাগ কিছু ফিকে হলো কিনা,
আর ইঞ্জিনটা সে সময়, অবিকল লেডি ম্যাকবেথের গলায় বলে ওঠে ‘ রক্তের গন্ধ যায়নি, আতরে ধুলেও যাবেনা।’


লাশকাটা ঘরে তার থ্যাঁতলানো ইঁদুরের মতো দেহ দেখে,
অন্ধকারও কেঁদে ফেলেছিলো।
শেষবার দেখা দিতে জানলায় এসেছিলো বুড়িচাঁদ,
নিঃসঙ্গ কথাদের  অন্তিম বেনোজলে ভেসে যাবে বলে।
ছলাৎ ছলাৎ ঢেউয়ে জলঙ্গীর জল আজও ছন্দ খোঁজে,
রাত্রি বলতে পারেনি তাকে,
সে কলম বিষাদের দেবতারা সযত্নে সাজিয়ে রেখেছেন পৃথিবীর নাগালের বাইরে।


আর ধানসিড়ি?
কবি তাকে বলেছিলো জলসই করে,
আবার আসবে ফিরে, তার কাছে,
শুধু তার কথা বাতাসে ছড়িয়ে দিতে আরো একবার।
নদী জানে, কেউ কথা রাখেনা কখনো,
বহুকাল হয়ে গেছে কিশোরীর হাঁস আর ঘুঙুর পরেনা,
তবুও আশার স্রোত বুকে নিয়ে বাঁচে,
হয়তো সে মায়াময় চোখদুটো শতাব্দী সাথে নিয়ে আবার ঘুরবে তার আনাচে কানাচে..


দূষণে ক্রমশ কমা হিজলের বন,
বনসাই সখে টবে পোষ্য বন্দী হওয়া অশত্থ বট,
তারাও কি ভুলেছে কবিকে?
বিকেলের রোদ্দুর সবুজের সাথে এসে খুনসুটি করে,
ফিসফিস পাতাগুলো শুধায় তখন,
এত জায়গায় যাও,
এত ঘর বন্দর শহরে ও গ্রামে,
দেখেছো কি তাকে, কথা যে কবিতা করে আমাদের নামে?
কবে থেকে আসেইনা সেই জাদুকর,
তাই বুঝি চারদিকে এতটা অসুখ!


শুধু তাকে ছোঁবে বলে পৃথিবীর বুকে বেঁচে বাংলার ধূসরিত মুখ।


আর্যতীর্থ