।সুখের সাকিন।


চৈত্র ডেকে বললো আমায়, ‘বোশেখ এসে যাওয়ার আগে,
বছর ঢুঁড়ে বলো দেখি, পড়লো কি কি তোমার ভাগে।
কয় ধরণের সুখ কুড়ালে, হাসির স্মৃতি জমলো কত,
জাদুর কাঠির খোঁজ কি পেলে, শুকায় যাতে বিষাদক্ষত?’


ঘাবড়ে বলি ‘ও চৈত্রমাস, হঠাৎ কেন এসব সওয়াল,
ছা-পোষাদের  আজের রুটিন, যেমন ছিলো ঠিক গতকাল।
লাফিয়ে মোটে পাইনা নাগাল, সাফল্যের ওই আঙুরফলের
স্বাদ না পেয়ে টক বলে যে, আমি তো সেই হেরোর দলের।’


চৈত্র বলে ‘করলে শুরু, আদ্যিকালের প্যানপ্যানানি
সহ্য করি কি করে যে, আজন্মকাল আমিই জানি।
মানুষ শুধুই দুঃখ মাপে, পায়নি কি তার হিসেব ভেবে
সবাই ভাবে তার হাতে কেউ, আলাদিনের চিরাগ দেবে।


অরণ্যতে যখন গিয়ে , প্রশ্ন করি কেমন আছো,
কোন ঝড়ে কার ডাল ভেঙেছে, ফেনায় না তা একটি গাছও।
বরং আমায় ঝাঁঝিয়ে বলে, খুব তো দিলে কালবোশেখি,
নতুন পাতার ভিত গড়েছি, উড়িয়ে তাকে দেখাও দেখি!’


আমিও করে ঝগড়ুটে মুখ, ঝেড়ে দিলাম চৈত্রকে খুব,
গাছ আর মানুষ এক করে দেয়, ভাবো তো এ কেমন বেকুব!
তেড়ে বলি ‘গাছকে ছাড়ো, ওরা কি আর বাজার করে,
ঝাপটা খেয়ে ভিত নড়ে যায়, রোজ আমাদের হাজার ঝড়ে।


ইচ্ছেগুলোয় বসছে মাছি, স্বপ্নে কবেই পড়লো মাটি,
রোজগারে পাই  ক্ষুদের কুঁড়ো, ধর্ম নিয়ে জাবর কাটি।
ঝগড়াঝাঁটি হচ্ছে রোজই, থমকে আছে অগ্রগতি,
চৈত্র তুমি যতই খোঁজাও, দুঃখযাপন আমার গতি।’


চৈত্র বলে ‘তোমার ভুলেই, বিষাদ এত জোর বাড়ালো,
মেনে নিয়ে মানিয়ে নেওয়ায়, তোমার তাবত সুখ হারালো।
কে বলেছে সুখের খোঁজে, ভাসতে হবে বাধ্য স্রোতে
মিথ্যা যখন যাপন খোঁটে, সুখ পাওয়া যায় বিদ্রোহতে।


আচ্ছা নাহয় পাল্টে দিলাম, অন্য ভাবে প্রশ্ন করি,
কয়খানা দিন বাদ দিয়েছো, শুধুই নিজের থোড় আর বড়ি?
সত্যি কথা বলার সাহস,  করলে শুনি কয়খানা দিন,
শিরদাঁড়াময় নির্ভয়তা,  সেটাই যুগের সুখের সাকিন।’


ছাব্বিশে তাই নিলাম শপথ, কলম আমার বইবে স্বাধীন..


আর্যতীর্থ