। টেনেটুনে পাশ।


না ওরা নব্বই পায়নি, বস্তুত ষাটেরও ধারেকাছে যায়নি।
এই ভূতের রাজার বরে নম্বরবৃষ্টির বাজারেও ওরা স্রেফ পাশ করেছে।
কোনো প্রকাশনীর বই জাপটে ধরে ছবি দেখা যাবে না কোথাও,
তবু যদি আজ ওদের কারো ঘরে যাও,
সস্তা মিষ্টি পাবে, সাথে অনাবিল হাসি ফ্রী বিলকুল
ওদের রেজাল্ট নিয়ে আনন্দে ডগমগ গর্বিত স্কুল,
ওরা প্রথম প্রজন্ম, যারা শিক্ষার আলো মেখে আজ দশক্লাস গন্ডী পেরোলো।
ওদের বাবারা কেউ ভ্যান টানে, কেউ মাতাদোরের ক্লিনার,
মিস্তিরি , ইঁটকুলি , প্রান্তিক চাষী বা খুচরো শ্রমিক,
অভাবী লড়াইয়ে তবু এই ছেলেমেয়েগুলো কেউ হারায়নি দিক,
স্কুল পাশে ছিলো, আর সাথে ছিলো শুধু না-হারা খিদে,
নাবালিকা বধূ বা চা-দোকানে ছোটু না হতে চাওয়া অদম্য জিদে আজ ওরা দশক্লাসপাস,
চিলতে মাটির ঘরে খেলা করে শিক্ষার দখিনা বাতাস।


না, ওরা মেধাবী নয় ঠিক তত।
বারো ক্লাস, মেরে কেটে স্নাতকেই শেষ কার্যত ওদের সোপান,
এর পরে কেউ হবে রাজমিস্ত্রি, কেউ মোটর মেকানিক , দেবে মোড়কোণে মনিহারী ছোট্ট দোকান,
মেয়েদের বিয়ে হবে ছা-পোষা ঘরে, বড়জোর খুচরো চাকরি কোনো গ্রাম বা শহরে।
ওদের ছবি কখনো ছাপা হবেনা খবরের কাগজে সাফল্য বলে,
যেসব ওই গাঁজাখুরী সিনেমায় চলে,
তেমন স্ক্রিপ্টে লিখে গাড়ি বাড়ি অনুপম সংসার ভাগ্য ওদের হাতে কখনো দেবেনা,
ওরা আজীবন শোধ করে যাবে গরিবীয়ানার দেনা,
তবু একটা তফাত হবে বটে আগামীতে
প্রজন্ম স্কুলে যাবে। ওরা জেনে গেছে, উত্তরনের পথ মানে খাতাবই।


একবার যে সেটা জানে, তার বাড়ি হেঁটে হেঁটে একদিন এসে যাবে ঠিক নব্বই।


আর্যতীর্থ