। তোমাকে বুঝতে হবে।


তোমাকে বুঝতে হবে, চারদিকের পৃথিবীটা পাল্টে গেছে।
তুমি দেশে থেকে রাষ্ট্রের সমালোচনা করলে সেটা দেশদ্রোহ,
আর বাইরে থেকে করলে তা আভ্যন্তরীন সমস্যায় নাক গলানো,
তোমাকে বুঝতে হবে, এইসবে না গিয়ে চুপ করে বেঁচে যাওয়া ভালো।


তোমাকে বুঝতে হবে, সীমার মধ্যে থাকলে তোমাকে কেউ কিছু বলবে না,
কিন্তু বাইরে যাওয়ার চেষ্টা কোরো না। কারণ প্রতিটি সীমান্তে এখন কাঁটাতার,
দুধারে ছড়ানো মাইন, সশস্ত্র অতন্দ্র প্রহরীরা পাহারা দেয় চব্বিশ-সাত,
অনেকটা দেশের বর্ডারের মতো। শুধু একটাই তফাৎ, এখানে হত্যারা নির্বিচার।


তুমি বলতেই পারো, এর আগে এত উঁচু পাঁচিল দেখোনি, প্রতিটি গরাদে আজ রাষ্ট্রের স্ট্যাম্প।
তুমি বলতেই পারো, স্বপ্ন আর স্বাধীনতা এখন আর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করে না,
প্রশ্নবিহীন আনুগত্যকে দাসখত বলে, রাষ্ট্রের সেটা চাওয়া ভালো কথা নয়।
তুমি বলতেই পারো, এই খাঁচার মধ্যে শিক্ষা আর মুক্তচিন্তার দমবন্ধ হয়ে আসে।


বলতেই পারো, কিন্তু বোলো না। খুঁটে খুঁটে বেঁচে যাওয়া শেখো,
বুঝতে শেখো, তোমায় যে ভোটাধিকার দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে,
ওটাকেই স্বাধীনতা বলে। ফ্রী স্পিচ শুধু মঞ্চের থেকে বিতরণ করা যায়,
নাগরিকের মুখে তা এলে বাকি সমস্ত পণ্যের মতো সেটারও মাশুল দিতে হয়,
তোমারে বুঝতে হবে আধুনিক পৃথিবীর সেই বাস্তব।


তোমাকে বুঝতে হবে, এই খাঁচা, ওই কাঁটাতার, এই মুখ বন্ধের ফরমান ও দ্রোহীর কয়েদ,
এই সমস্তই তোমার এবং কেবলমাত্র তোমারই ভালোর জন্য করা হচ্ছে।


লক্ষ্মী মানিক আমার, বেঁচে থাকা দরকারী সেটা অন্তত বোঝো!


আর্যতীর্থ