। ভাইরাস।


বিশ্বাস আর অবিশ্বাস দুটো অদম্য ভাইরাসের নাম।
ধরলে হু হু করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে ,
এ মানুষ থেকে ও মানুষ,
এই পাড়া থেকে ওই পাড়া,
এমনকি এক দেশ থেকে আরেক দেশ।
সংক্রমিত মানুষগুলো নিজেরা মরেও ছড়িয়ে দিতে থাকে
সেই নিরাময়হীন রোগের প্রকোপ,
বেঁধে যায় স্বজনঘাতক যুদ্ধ,
অচলা ভক্তির নামে বাসা বাঁধে যুক্তিবিহীন কুসংস্কার,
হত্যার নামাঙ্কন হয় বলিপ্রদান।


ভীষণ ছোঁয়াচে বিশ্বাসের ভাইরাসে,
ইতিহাসে উহ্য অলীক পুরুষ হয়ে উঠতে পারেন
সর্বগৃহে পূজ্য বরাভয়দাতা ত্রাতা,
পুরাণের চরিত্ররা ঐতিহাসিক বলে গ্রাহ্য হবার দাবী জানায়,
গোটা জাতিকে বিশুদ্ধতার তত্ত্ব গিলিয়ে
হিটলারের পেছন পেছন উঠে আসতে পারেন অনেকে।
এক ভিন্ন ভূখন্ডের মানুষের ইচ্ছেকে গিলে
নাগরিক বেড়ি পরিয়ে
সংক্রমিত মানুষের দল তাকে দেশপ্রেম আখ্যা দেয়।
অপছন্দের মানুষের চূর্ণবিচূর্ণ আর্তনাদে মিশে যায়
রক্তপিপাসু রোগী জনতার শীৎকার,
শিকড় উৎপাটিত হঠাৎ উদ্বাস্তুদের প্রতি করুণার বদলে দেশময় দ্বেষ জেগে ওঠে,
অমিল অন্ন বস্ত্র আর বাসস্থানের ঘাড়ের ওপরে চেপে বসে উপাসনালয়ে এক মস্ত বিগ্রহের দাবী।


অবিশ্বাসের ভাইরাসটিও কম ছোঁয়াচে নয়।
ক্রমাগত উঁচু হওয়া পাঁচিল আর কাঁটাতারের বেড়ায়,
অপরিচিত মানুষ ধর্ম বর্ণের ভেদে শত্রু মনে হয়।
দুই পড়শি দেশের অস্ত্রের ভান্ডার নাগরিক স্বাস্থ্য ও স্বাচ্ছন্দ্যের বিনিময়ে উপচে পড়তে থাকে,
ভাইরাসের প্রবল প্রকোপে দুজনের কেউই খেয়াল করেনা,
বেচনেওয়ালা বেওসায়ি-টি এক ও অভিন্ন।
ভোজনের পার্থক্যে, ভজনা’র ভিন্নতায় শান্ত জনপদ
মুহূর্তে বধ্যভূমিতে বদলাতে পারে এই রোগ।
ওপরমহলে আমে দুধে মিশে গেলেও,
নিচুতলায় ভাইরাস-আক্রান্তরা ভিন্ন পতাকার বাড়ি ঘিরে আগুন লাগায়।


মাননীয় সুধীবৃন্দ, এই ভয়ঙ্কর মহামারীর থেকে বাঁচতে,
প্রত্যহ যুক্তির ভ্যাক্সিন নেওয়া আবশ্যক,
ভুলবেন না যেন।


মনে রাখবেন, বার্তাটি জনস্বার্থে প্রচারিত কখনো হবেনা।


আর্যতীর্থ