আমার টিনের চালে বৃষ্টি-নূপুর
জল-পরীদের নাচ,
মিস্ত্রিগুলো ভাবছে মনে
বেশ হয়েছে আজ ।
ভীম-গরমে খুঁড়তে মাটি,
কাটতে লোহার পাত,
হাড় জ্বালানো করাত বুড়ো 
দিচ্ছে না আজ সাথ ।
এর মধ্যেই বৃষ্টিরাণি
খোশ-খেয়ালে ঝরে,
মালিক বাবুর উচ্চচাপের
পারদ আরো চড়ে ।
না খাটিয়ে দিন-মজুরে
পয়সা দেওয়া যায় ?
বেআক্কেলে বৃষ্টিটা আজ
করল এ কী হায় !
বলতে পারো মালিক বাবু
গরিব হওয়া দোষ ?
ঘাম ঝরানো পরিশ্রমীর
উপর কেন রোষ ?
দুর্বল বলে শোষণ করো
জ্ঞানের দম্ভ ঝেড়ে,
'বাকহীন' ওই মানুষগুলোর
মুখের অন্ন কেড়ে ।
ওরাও তো স্বপ্ন দেখে
"ঘর, কাপড়া, খানা..."
গোত্রে-গরিব মানুষগুলোর
স্বপ্ন দেখাও মানা ?


এদের তোমরা তাড়িয়ে খাটাও
দেখিয়ে ভয়ের থানা,
ভদ্দ বাড়ির আদলে গড়া
তোমার কষাইখানা ।
একশো তলায় বিহার করো
যতোই মাখো রং--
মন-কাঙালের লিস্টিতে যে
তুমি'ই প্রধান সঙ ।
তোমার মতো কুবেরগুলোই
মে দিবসের বক্তা,
ডাবর হানির অ্যাম্বাসেডর
আসলে নিরক্তা ।


মূর্খগুলোর শ্রম ভাঙিয়েই
চলছে সোনার দেশ,
ফলছে ফসল, 'তৈরি', 'গড়া'
নির্বোধে নেই ক্লেশ ।


তন্ত্র ছেড়ে বেরিয়ে এসো,
মানুষ হয়ে বাঁচো ,
মালিক-মার্কা শেওলা মনের
কোদাল দিয়ে চাঁছো ।
আজ যদি না মালিক বাবু
শোষণ করো রোধ,
পিঠ দেয়ালে ঠেকলে পরে
জ্বলবে শোধের ক্রোধ ।
পারবে সেদিন বাঁচতে তুমি ?
মুচকি যেমন হাসো ?
তাই রক্ত-চোষা স্বভাব ছেড়ে
একটু ভালোবাসো ।