মৃণালীনি,
মা হারা শিশুরা কেমন করে বাবার কোল খোঁজে,
সেবার বিলেত যেতে যেতে দেখেছিলাম।
লালবাড়ির ঘরে তুমি যখন
শুয়ে থাকতে,
আমার হাতপাখার বাতাস,
হোমিও ডাক্তারের ওষুধ, বাচ্চাদের মা ডাক,
কিছুই তোমার ম্লান মুখে আভা এনে দেয়নি।
বড্ড সাধ করে তোমার নাম রেখেছিলাম,মৃণালীনি।
তোমার অপূর্ব রান্নার সমঝদার,
সাদাসিদে জীবনের গল্পের হতভাগ্য পিয়াসী কবি,
সেদিন থেকেই চলেছিল একা দীর্ঘদিন,জান?
মাঝে মাঝে তোমার লেখা চিঠিগুলো খুলে দেখতাম,
দেবনাগরী অক্ষরে আমাদের সন্তানদের নাম লেখা।
প্রদীপ নিভে গেলে কেউ যেন বিরক্ত না করে আমায়,
বলেছিলাম,
তবুও আমায় দেখে যেতে হয়েছিল,
আমাদের সন্তানদের চলে যাওয়া।
সফেদ চুল আর অনেক সম্মানের সাথে অনেকের মাঝে,
একদা রবীন্দ্রনাথ জেগে ছিল একা,
শান্তিনিকেতনের বারান্দায়।
প্রিয় মৃণালীনি,
তোমার কি মনে আছে,
এই শান্তির নিকেতন ভালবেসে তুমি,
অতিপ্রিয় অলঙ্কার খুলে দিয়ে ঋণী করেছিলে,
এত ঋণী করে চলে যাওয়া কেন মৃণাল?