অবহেলায় নদীর গায়ে লেপ্টে ছিলো  
এক তাল মাটি,
ভেজে কি শুকোয় কেউ তার একাধিক দু'খের
নেয়নি খবর।


একদা কুমোর কুড়ালো নদীর গা থেকে।
পায়েতে মাড়িয়ে  দিলো পিষে,
আকাশ সমান উঁচু থেকে ফেলে, আঁছড়ে আঁছড়ে,
টেনে ছিঁড়ে, হাঁচড়ে পাঁচড়ে, করেছিলো
একবার নরম তো একবার শক্ত চাঙর।
হঠাৎ বসিয়ে দিলো কুমোর চাকায়,
বনবন ঘুরলো চাকাটা , বনবন  ঘুরলো মাথাটা।
এত করে সাধ মিটলো না তাই
ফেলেছিলো ঠাঁ ঠাঁ রোদে।
রোদ থেকে গনগনে আগুন আগুনে।
শরীরটা জ্বলে গেল,
পুড়ে হলো লাল, আহাটুকু বললো না কেউ।
নতুন অচেনা নাম রাখা হলো তার ," কলসি ",
দু'খের চাপে হারালো সে পুরোনো নামটাও ।


বলেছিলো লোকে," বাহ্ বেড়ে তো কলসিখানা।"
কলসি  আসলো হাটে,
মাথায় মাথায়, রাজ সম্মানে ।
হাট শুধু  হাট নয় এ হাট কলসির কসাইখানা।
এখানে সবাই কলসি পরখ করে, চাপড়ায়।
ছেলেছোকরা, বুড়োহাবড়া, মেয়েছেলেরা থাপড়ায়,
কি জোদ্দার, কি চাঁড়াল, কি মুচি, কি ডোম,
ভদ্দরনোকেরাও  এখানে সমান চাপড়ায়।
রোদ-বৃষ্টি, পা-পাড়ানি, চরকি ঘুরান সহ্য হয় সব,
বেহদ্দ চড় কি চাপড় সহ্য হয় না, হতে চায় না।
"ধুর, ফাটা তো মিঞা, পাছা কালো,
বাইছা আনবা না হাটে।" তারপর ?
যে বোঝার বুঝে নিক, বুঝে নিক যার যা বোঝার ,
অযথা বোঝার দায় নেই কারো।


বৃষ্টিতে ভেজা, রোদে পোড়া দু'খী কলসি
কেউ তার নেয় না খবর ।
মাটি ছিলি ভালো ছিলি,
মাটি হয়ে মিশে যেতে তোর, লাগবে যে হাজার বছর।
০৯/০২/২০২২