তুমি এই শহরটা ছেড়ে যাওয়ার পর ,
শুরুর দিকে বেশ কিছু প্রতিবাদ হয়েছিল।
ঘরকুনো মানুষগুলো রাজপথে হেঁটেছিল প্লাকার্ড হাতে।
তুমি ছেড়ে যাওয়ার কদিনের মধ্যেই নতুন কিছু শপিং-মল উঠেছিল শহরটাতে।
তবে ওরা বিশাল বাজারগুলোর ছোট্ট এক-কোণও,
তোমার জন্যে খালি রাখেনি জানো ;
আমি কিন্তু ওদের বলেছিলাম, তুমি ঠিক ফিরে আসবে একদিন।
ওরা শুনলো না, না না কেউ শুনলো না ...
আসলে গুণতি টাকার খসখস আওয়াজ ছাড়া ওরা, আর কিচ্ছু শুনতেই শেখেনি কখনো ।
গ্লোবালাইজেশনের দূষণে বধির কান...
মানুষের কান্নার ঠিক কেমন স্বাদ তাই'ই জানেনা,
আর তুমিতো মোটে ছোট্ট একটা পাখি !
কিন্তু আমি তোমার খুব অভাব বুঝি চুপ-দুপুরে,
জানো, নোনা ধরা ফাঁকা ঘুলঘুলি আমায় নিয়মিত কষ্ট যোগাই।
পড়ার টেবিলটাতে আর একটাও খড়কুটো পরে না,
আর কিচকিচ করে মাথা খাও না সারাদিন ;
তাই আমারও পড়ার ফাঁকে ঝগড়া পাইনা তেমন।
ফুরুৎ করে লাফিয়ে গিয়ে বসোনা কেন আর,
জানলার পশ্চিমে জামরুল গাছটাতে।
কেনো মুখ ভেঙিয়ে বলোনা 'পারলে ধরে দেখা'
তুমি তো আমার বন্ধু ছিলে, অভিমান করে ঝগড়া করেছি,
কিন্তু ছেড়ে তো যেতে বলিনি কঙ্খনও !
তোমার ওইটুকু শরীরের কোথায় রাখো এত অভিমান ?
খুব রাগ হয় জানো, কালাপাথরের আগুন জমে বুকে।
মনে হয় জেনারেশনের প্রগতিকে সমুলে বেঁধে,
শহরের সব অসভ্য টাওয়ার গুলোকে জ্যান্ত জ্বালাতে।
ইদানিং আমার পড়ার টেবিলে নেটওয়ার্ক ভালো আসে
ছোট ছোট স্মৃতি আর কিচকিচ কান্নাও ভেসে আসে,
তবু তুমি আর পথ ভুলেও এঘরে আসো না...
আজ দুপুরেও একইরকম বিষণ্ণতা, উঁচু ধুলোর বসবাসে ।
আচ্ছা, আমাই কি আর তোমার মনে পড়ে,
জমা অভিমান কমাতে পারো কি হটাৎ আদরে ?
নাকি মানুষের মতই সহজে ছেড়ে যাওয়া যায়,
পারোনা কি ঘুলঘুলি জুড়ে ছোট্ট বন্ধু আমার
আরোও একবার ভালোবাসার ঘর বাঁধতে ?
কথা দিলাম বিরক্তিটাই প্রিয়, ঝগড়াটা আর নয় ।
শুধু ফিরিয়ে নেবো, শুধুই ভালোবাসা দেবো ,
প্লিজ, মনে রেখো ছোট্ট চড়াই
এ ব্যস্ত শহরের ভেতরে আজও আরেকটি শহর ,
দিন গোনে ছেড়ে যাওয়া বন্ধুর অধীর অপেক্ষায়।