রক্তে মাংসে গড়া দেহে প্রানহীন বেঁচে ছিলাম,
গত এক যুগ ধরে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে
পরাজীত জীবনের পরিসমাপ্তি চাইতাম।
শূণ্যতার মাঝে হতাশাগ্রস্ত স্বপ্ন আশাগুলি প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির হিসাব কষে দিন রজণী
পৃথিবীর বুকে আমিও মানুষ ভুলে গিয়েছিলাম।
দুঃখ কষ্টের জ্বালা সইতে সইতে নিজেকে সকলের আড়ালে লুকিয়ে রাখতাম।
মনে হত আমি যেন অবাঞ্চিত কেউ,
অপয়া অলক্ষী অভাগা কেউ,
স্রষ্টার অভিশপ্ত কেউ,
আমি যেন কারো জন্য নয়,
মা বাবা ভাই বোন স্ত্রী সন্তান কারো জন্য আমিও ভাবিনি এই সময়টাতে।
আপনারাও নিশ্চয় এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন আমি কতটা খারাপ?
তবে আজ আবার আমার নব জন্ম হয়েছে,
চুল দাড়ি সাদা হলেও আমি যেন আজ কচি খোকা।
দুর্দান্ত শক্তি সাহসের সঞ্চালন ঘটেছে প্রাণে।
এ কি ঈশ্বরের মহীমা?
প্রভুর দয়া?
ভগবানের কৃপা?
মহান আল্লাহর মেহেরবানী?
আমার প্রতি এত দয়ার অনুগ্রহ রেখেছিল?
অদৃশ্যের নিরাকার অস্তিত্বের রুপ আমি না দেখলেও
মানুষের রুপেই হয়তো এসেছিল সে আমার জীবনে।
আমি তাকে ভালোবেসেছি,
তার মাঝে নিজেকে বিলীন করেছি,
সে আসাকে রুপ যৌবন ফিরিয়ে দিয়েছে,
সুন্দর পৃথিবীতে বাঁচার জন্য নতুন রুপে আমাকে সৃষ্টি করেছে।
আমি জানি সে আমাকে কতটা ঘৃণা করে,
সে শুধু আমার পাপের স্বাক্ষী হয়েছে,
আমাকে ভালোবাসতো কি না সন্দেহ ছিল?
তবুও নিজেকে পুনঃজন্ম দেবার জন্য আমি তাকে আকড়ে ধরেছিলাম।
তার চরণতলের মাটি হয়ে নিজেকে সপে দিয়েছিলাম।
যেন সে আমার মাঝে বিচরণ করলে
আমি তার পদ চিহ্নগুলি ধারণ করতে পারি।
সে আমাকে সম্মান দিয়েছে কিনা জানিনা?
মর্যাদার আসনে কতটা ভক্তি শ্রদ্ধা করেছে সেটা অনুমানে উপলব্দি করেছি মাত্র।
তবে কখন যেন সে যত্ন সহকারে তোলে নিয়ে আমাকে সুন্দর একটা মাটির পুতুল গড়েছে।
আজ আমি হাসি খুশির আনন্দ নিয়ে মানুষের মাঝে ফিরে এসেছি
তাকে চিরতরে দুরে বহুদুরে রেখে এসেছি
আজ আমার অতৃপ্ত আশাগুলি শান্তির নিশান উড়াতে শুরু করছে।
বিজয়ের পতাকা স্বাগতম জানাচ্ছে নব জন্মের।
আমি জানিনা অনাগত জীবনে কতটা সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌছাতে পারব।
তবে আত্মবিশ্বাস অটল।
জানিনা চুড়ান্ত লক্ষ্যের শীর্ষে অবস্থান করব কি না?
তবে আজ ভরসা পাচ্ছি।
নাম যশ খ্যতির সুনাম দিক বিদিক ছড়িয়ে দিতে আজ আমি আলোকিত একজন মানুষ বলেই মনে হয়।
সুপ্ত প্রতিভার গুপ্ত দ্বার উম্মোচন করে আজ আমি বিকশিত হয়েছি।
আমার অন্তরের পুষ্পকলি নব পাঁপড়ি মেলে ফুটন্ত গোলাপের সুবাস বাতাসে বিলাচ্ছে।
আকুল করা ঘ্নাণে আজ আমি ভ্রমরের ন্যায় মানুষকে ব্যকুল করতে ব্যস্ত।
আমি তার নিকট কৃতজ্ঞ।
আমি তাকে ভুলিনি কোনদিন ভুলতে পারব না।
আমাকে তার মনে থাক বা না থাক আমার নিকট সে থাকবে অমর অক্ষয় চিরঞ্জীব।
অনন্তকালের পথ চলার মহারথের সারথি সে পরপারেও আমার সহযাত্রী।
পরম করুনাময়ের নিকট তার জন্য পবিত্র হৃদয় থেকে প্রার্থণা করি।
হে জগত বাসী আপনারাও আমার সেই মানুষটার জন্য প্রাণ ভরে দুহাত তোলে দুয়া করবেন।
আর একটা অনুরোধ,
নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন।
নিজের ভালো মন্দ হাসি খুশির আনন্দ অনুভুতি বুঝতে শিখুন।
একটু সুখ শান্তির আশায় স্বার্থপরের মত কাউকে আকড়ে ধরুন।
একদিন আপনারও নবজন্ম ঘটবে।
স্বার্থ ত্যাগে স্বার্থ ভোগে ভালোবাসা চিরন্তন সত্য।