এমন কত দিন ই তো গেছে
কারো জন্য কিংবা কত কিছুর জন্য অপেক্ষায় থেকেছি।  
বসন্তে ফুল ফুটা দেখবো বলে ,
অধির আগ্রহে অপেক্ষা করেছি পুষ্পবৃক্ষ বাগানে।    
এমন অনেক দিনই তো গেছে
আমি অপেক্ষা করেছি  
হয়তো কথা দিয়ে ছিলে তুমি আসবে
বৈশাখের পরে আমাদের  দেখা হবে
আমি  অপেক্ষায় থেকেছি।
একবার বলেছিলে যখন দেখবে জ্যৈষ্ঠর আকাশে ঈশান কোণে কাল মেঘ,
বুঝবে আমি দাঁড়িয়ে আছি তোমার জন্য,
কিংবা যখন আষাঢ়ের বর্ষা নামবে,
আমরা দুজনে একসাথে বৃষ্টিজল গায়ে মাখবো।  
আকাশপানে দৃষ্টি রেখ, আমি আসবো।
আমি সেই আষাঢ়ে মেঘের অপেক্ষায় থেকেছি।


সে বছর চৈএের খর-প্রদাহে মাঝে বার বার বলেছিলাম
তোমায় আসতে
তুমি সময় দিতে পারনি!
তুমি বলেছিলে যখন কৃষ্ণচুড়া গাছে প্রথম ফুলটি দেখবে
তখন বুঝবে আমার আসার দিন ঘনিয়ে এসেছে।
নিজেকে প্রস্তুত রেখ আমি আসবো।  
আমি কত বসন্ত তোমার  অপেক্ষায় থেকেছি।  


তখন কলেজে পড়তাম একবার আমার প্রিয়বন্ধু ইমু  
ঠাট্টা করে বলেছিল, জীবনে তো কিছুই দেখলি না এই জঞ্জালে ভরা শহরটা ছাড়া,  
চল একবার কক্সবাজার ঘুরে আসি।
সেখানে মস্ত বড়ো আকাশ দেখবি,  
নোনা পানির মানুষগুলোর জীবন দেখবি, সমুদ্র ম্লান,  বেলাভূমে সূযাস্ত দেখবি
গল্প কবিতা লেখার ব্যাপারে কিছু উপাদান
পেয়েও যেতে পারিস।
তৈরী থাকিস, আমি আসবো
আমি অপেক্ষায় থেকেছি।      


আমি বন্ধু, আপনজন , এমনকি- শত্রুর জন্যেও
অপেক্ষায় থেকেছি,
বন্ধুর মধুর হাসি আর শত্রুর ছুরির জন্যে
অপেক্ষায় থেকেছি-
কোনো বন্ধুর জন্যে
কিংবা অন্য অনেকের জন্যে
হয়তো বা ভবিষ্যতেও অপেক্ষা করবো
কিন্তু তোমার জন্য আমি অপেক্ষা করবো না।
কৃষ্ণচুড়া গাছের ফুল ফুটে গেছে সেই কবেই
বৈশাখ শেষে জ্যৈষ্ঠর আকাশের ঈশান কোণের কাল মেঘ পেরিয়ে
আষাঢ়ের বর্ষা পর্যন্ত এসে গেল তার পরেও তুমি এলে না।
তাই  তোমার জন্য আমি আর অপেক্ষায় থাকবো না,
-প্রতীক্ষা করবো।
‘প্রতীক্ষা’ শব্দটি আমি শুধু তোমারই জন্যে খুব যত্নে
বুকের তোরঙ্গে তুলে রাখলাম।


আমি যে তোমার জন্য অপেক্ষা করতে করতে বড়ই ক্লান্ত
তাই তুমি আমাকে প্রতিক্ষা করতে বোলো
আমি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবো অনড় বিশ্বাস নিয়ে,
দাঁড়িয়ে থাকতে-থাকতে
আমার দু পায়ে শিকড় গজাবে…
তবুও আমি তোমার আগমনের প্রতিক্ষায় থাকবো।