ছোটো সেই মেয়ে চেয়ে আছে দূরে-
ঘরের জানালা ধরে;
ওই বুঝি বাবা ফিরে আসে তার
আসিবে এবার ঘরে।
চোখের সে জল শুকাইয়ে গেছে
ফোপানো ফোপানো কান্না;
অনাহারী দিন শোকগাথা সাথে
বলিতে যে আর পারে না।


এমন সেদিন কুয়াশার কালে
সকালে বেরোল বাবা;
পুবের সূরয ছিল বেশি লাল
নতুন প্রভাত আভা।
দূরেতে ডাহুক ডেকে ডেকে ফেরে
গাছের পাতায় ঝড়;
এই বুঝি শেষ হাত নাড়া হবে
ভাঙিবে সুখের ঘর।


বাবা যে তাহার লোকগান করে
দিদেশ বিভুঁই থাকা;
ছোটো থেকে মেয়ে বড়োটি হয়েছে
এভাবে আগলে রাখা।
বাবার মাথায় চুল ছিল বেশি
কণ্ঠে মধুর গান;
স্নেহ দিয়ে তাই রাখিত মেয়ের
মেয়ে যে তাহার প্রাণ।


অকালের কালে হারাইয়া গেল
হল আকাশের তারা;
প্রতিটি সাঁঝেতে প্রদীপ জ্বেলেছে
পেয়েছে হৃদয়ে সাড়া।
বাবা এসে রাতে কোলে তুলে নিত
আদরে ভরাত মুখ;
বাবার কোলেতে মিশিয়া মেয়ের
সেকি স্বর্গের সুখ।


মা যে তাহার ডুকরে কাঁদে
ঘরের দেয়াল জুড়ে;
প্রতিক্ষণে তার স্মৃতি লেখা আছে
আছে কথা সুরে সুরে।
কত কথা তার বলা হয়েছিল
কতেক ছিল যে বাকি;
চোখের স্বপন চোখের পরেতে
আজকে যতনে রাখি।


ওই যে দেখো মা, বাবা বুঝি আসে
কে যেন বাইরে এল;
অবুঝ মনেতে সকলই বোঝে
বৃথা সান্ত্বনা পেল।
দিনের পরেতে দিন চলে যায়
মাসেক পরেতে মাস;
বাবার ও স্মৃতি বুকেতে আমার
এ কেমন সর্বনাশ!
       -------