ছন্দ ও কবিতার পাঠ –<পর্ব-৪, ভাগ-৩৫>  – মাত্রাবৃত্ত ছন্দের ধারণা
---ড. সুজিতকুমার বিশ্বাস  
------------------------------------------------------------------------------
আজকের পাঠ উৎসর্গ করা হল - আসরের প্রিয়কবি সংহিতা  মহাশয়াকে।  
-----------------------------------------------------------------------------          
আগের পাঠে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের ভূমিকা আলোচিত হয়েছে। আজ মাত্রাবৃত্ত ছন্দ বিষয়ে আরও ধারণা দেওয়া হল।


মাত্রাবৃত্ত ছন্দের সংজ্ঞাঃ
বিলম্বিত(মধ্যম) লয় আশ্রিত; ধ্বনি ঝংকার সমন্বিত ৫/৬/৭ মাত্রার পূর্ণপর্বে গঠিত যে ছন্দে রুদ্ধ অক্ষর মাত্রই দু মাত্রার তাকে বলে মাত্রা বৃত্ত বা ধ্বনি প্রধান বা সরল কলামাত্রিক ছন্দ।
অপর নামঃ মাত্রাবৃত্ত, কলাবৃত্ত, সরল কলামাত্রিক, ধ্বনিপ্রধান, সংস্কৃত ভাঙ্গা, সাধুভাষার পূর্বভূমক।


মাত্রা বৃত্ত ছন্দের বৈশিষ্ট্যঃ
১। এর বিলম্বিত বা মধ্যম লয়;
২। এর চরণের আদি থেকে শেষ পর্যন্ত এক রকমের ধ্বনিঝঙ্কার অনুভব করা যায়। পাঠ মাত্রেই তা কানে ধ্বনির মোহ সৃষ্টি করে।
৩। সরল মাত্রা গণনা পদ্ধতি; মুক্ত অক্ষর ১ মাত্রা; রুদ্ধ অক্ষর ২ মাত্রা।
৪। সাধারণত এর পূর্ণপর্ব হয় ৫ বা ৬ বা ৭ মাত্রার। তবে সাম্প্রতিককালে ৪ মাত্রার পূর্ণ পর্বেও রচিত হচ্ছে।
৫। এই ছন্দ মূলত সংগীতে ব্যবহার হয়।
৬। যুক্ত ব্যঞ্জনের উচ্চারণ বিশ্লিষ্ট।
৭। অপূর্ণ পর্ব ও অতি পর্বের সম্ভাবনা প্রচুর;
৮। 'হয়' 'কয়' ক্ষেত্রে ২ মাত্রা;
৯। 'ঐ' 'ঔ' ২ মাত্রার মূল্য পায়।
১০। শব্দের শুরুতে যুক্তাক্ষর থাকলে ১ মাত্রা।


***আজ এই পর্যন্ত। তবে চলবে।
------------------------------------------------------------------------------
সূত্র/ ঋণস্বীকার- ১) বাংলা ছন্দ রূপ ও রীতি- ড। মিহির চৌধুরি কামিল্যা।    
----------------------------------------------------------------------------
আসরের কবিদের কাছে আমার অনুরোধঃ এই আলোচিত পর্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে নীচে সযত্নে উল্লেখ করুন। তাছাড়া কোনো গঠনমূলক মতামত থাকলে আন্তরিকভাবে জানাবেন।