ছন্দ ও কবিতার পাঠ –<পর্ব-৪, ভাগ-৩৭>  – মাত্রাবৃত্তে ছড়া লেখা
---ড. সুজিতকুমার বিশ্বাস  
------------------------------------------------------------------------------
আজকের পাঠ উৎসর্গ করা হল - আসরের প্রিয়কবি সমীর প্রামাণিক  মহাশয়কে।    
------------------------------------------------------------------------------        
আগের পাঠে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের মাত্রাবিন্যাস নিয়ে আলোচিত হয়েছে। আজ মাত্রাবৃত্ত ছন্দে ছড়া লেখা বিষয়ে কিছু ধারণা দেওয়া হল।


স্বরবৃত্ত ছন্দের বিপরীত ছন্দ হল মাত্রাবৃত্ত ছন্দ। স্বরবৃত্তে যুগ্মধ্বনি এক মাত্রা, মাত্রাবৃত্তে সেখানে দুই মাত্রা। এখানে অযুগ্মধ্বনি এক মাত্রা ও যুগ্মধ্বনি দুই মাত্রা।
উদাহরণঃ
"ক্ষান্ত পিসির/ দিদি শাশুড়ির/ পাঁচ বোন থাকে/ কালনায়;
শাড়িগুলো তারা /উনুনে বিছায়/ হাঁড়িগুলো রাখে/ আলনায়।"
এখানে প্রতি পূর্ণপর্বে ছয় মাত্রা করে আছে, অপূর্ণ পর্বেও চার মাত্রার সমপর্ব আছে। এখানে অযুগ্মধ্বনি এক মাত্রা ও যুগ্মধ্বনি দুই মাত্রা ধরে হিসাব করা হয়েছে। এই হিসাবে ছড়া লিখলে তা হবে মাত্রাবৃত্তের ছড়া।
ছড়ায় স্বরবৃত্তের দাপট বেশি। কিন্তু মাত্রাবৃত্তে ছড়ার সংখ্যাও কম নয়। মাত্রাবৃত্ত যদিও কবিতার ছন্দ, কিন্তু এই ছন্দে ছড়া লিখতে অসুবিধা হয় না। বরং বৈচিত্র্য আসে।


৪ মাত্রার চালে মাত্রাবৃত্তের ছড়াঃ
"বড়ো বাবু/ খাটিয়াতে/ বসে বসে /পান খায়,(৪/৪/৪/৪)
পায়রা আ/ঙিনা জুড়ে /খুঁটে খুঁটে/ ধান খায়।"(৪/৪/৪/৪)
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
আবার,
"আম পাকে/ বৈশাখে/ কুল পাকে/ ফাগুনে(৪/৪/৪/৩)
কাঁচা ইট/ পাকা হয়/পোড়ালে তা /আগুনে।"(৪/৪/৪/৩)
-সুকুমার রায়।


৬ মাত্রার চালে মাত্রাবৃত্তের ছড়াঃ
"হোটেলে ঢুকেই/ চ্যাচাঁলেন তিনি(৬/৬)
আন দেখি ব্যাটা /বিরিয়ানি!(৬/৪)
হোটেলের বয় /সবিনয়ে কয়(৬/৬)
দ্যান, ট্যাহা দ্যান /বিড়ি আনি।"(৬/৪)
-লুতফর রহমান রিটন।  


* সংযোজিত হবে।
***আজ এই পর্যন্ত। তবে চলবে।  
------------------------------------------------------------------------------
সূত্র/ ঋণস্বীকার- ১) ছড়ায় ছন্দ- প্রণব চৌধুরী    
----------------------------------------------------------------------------
আসরের কবিদের কাছে আমার অনুরোধঃ এই আলোচিত পর্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে নীচে সযত্নে উল্লেখ করুন। তাছাড়া কোনো গঠনমূলক মতামত থাকলে আন্তরিকভাবে জানাবেন।