*************আসরের কবিতা ও তার কাব্যিকতাঃ ২১***************


কবিতাঃ  বাঁচতে চেয়েছিল ও যে!
কবিঃ মনোজ ভৌমিক
প্রকাশিত তারিখঃ ০৬/১১/২০১৭ (আজ)
***কবি ১০ মাস  হল বাংলা-কবিতার আসরে আছেন। কবি আজ পর্যন্ত ১৩৯টি কবিতা এই সাইটে লিখেছেন। কবি আসরে “দুর্নিবার কবি” নামে পরিচিত। কবি আসরে নিয়মিত লিখছেন।
-----------------------------------------------------------------------------------
কবির লিখিত কবিতাঃ


পাখিটা জন্মেছিল অনেক আগেই,
কিন্তু খোলক ফাটে নি।
তাই ওর জন্মটা কেউ দেখেনি!
জীবনের দুরন্ত উন্মাদনা,
জড় খোলকের মধ্যেই নিশ্চুপ।
অন্ধকারে অমৃতের স্বাদ নিতে নিতে...
প্রহর গুনছিল!
একটা রোমহর্ষক সকালের।
দুরন্ত কল্পনায় আবদ্ধ চোখ দুটি...
স্বপ্নে বিভোর।


খোলক ফেটেছে....
সত্যিকারের জন্ম নিয়েছে ঐ পাখি!
কিন্তু এ কি! কচি কচি পা দুটি মাটিতে রাখতে গিয়ে,
অস্পষ্ট ডানা দুটি নিয়ে,আছড়ে পড়ল ও যে!
পৃথিবীর হাওয়ায় আজ বারুদের গন্ধ।
খোলক থেকে বেরিয়ে আসা পাখিটির তাই কি শ্বাস রুদ্ধ!
আধ ফোটা চোখ দুটি ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে আসছে।
দুপুরের সূর্যটা তুলতুলে শরীরটাকে জ্বালিয়ে দিল যে!
দিগন্তের অন্ধকারে 'সত্যি' জন্ম নেওয়া পাখি---
সুন্দর স্বপ্নদের গলা টিপে ধরে।
অবশেষে,পৃথিবীর খোলকের মধ্যে নিশ্চুপ!
বাঁচতে চেয়েছিল ও যে!


****** কবির এই কবিতাটি রুপক ধর্মী, বেশ সুন্দর, কাব্যময় ও অর্থবহ। সমস্ত দিক বিচার করে বলা যায় কবিতাটির কাব্যভাবনা যথার্থ। কবিতাটি পাঠকের অনেক ভালোলাগা ও ভালোবাসায় পূর্ণ। কবিতায় যথেষ্ট ভাবনাবোধের ও কাব্যিকতার  প্রকাশ মেলে। কবির এই কবিতাটি গদ্য রূপে লেখা।
-----------------------------------------------------------------------------------
-----------------------------------------------------------------------------------
কবিতার শ্রেণি-  
রুপক ধর্মী কবিতা।
-----------------------------------------------------------------------------------
কবিতার নামকরণ—
কবিতার বিষয়ের সাথে নামকরণ যথার্থ। একটি পাখির জন্ম ও মৃত্যুর নেপথ্যে একটি নতুন জীবনের মৃত্যুকে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
----------------------------------------------------------------------------------


কবিতার অর্থ-
কবি মনোজ ভৌমিক তার “বাঁচতে চেয়েছিল ও যে!” কবিতায় রূপকের আড়ালে এক নতুন জীবনের পরিসমাপ্তির কথা মানবিক আবেদনের সাথে তুলে ধরেছেন। একটি পাখি জন্মেছিল অনেক আগেই, কিন্তু তার আবরন ফাটে নি। তখন ওই পাখির জন্ম কেউ দেখেনি। তার জীবনের দুরন্ত উন্মাদনা ওই জড় খোলকের মধ্যেই নিশ্চুপ ছিল। অন্ধকারে অমৃতের স্বাদ নিতে নিতে সে যেন প্রহর গুনছিল। একটা রোমহর্ষক সকালের দুরন্ত কল্পনায় আবদ্ধ তার চোখ দুটি স্বপ্নে বিভোর ছিল। তার পর একদিন সেই আবরন ফেটে সত্যি সত্যি জন্ম নেয় ওই পাখি! কচি কচি পা দুটি মাটিতে রাখতে গিয়ে অস্পষ্ট ডানা দুটি নিয়ে,আছড়ে পড়ল সে। বারুদের গন্ধে আধ ফোটা চোখ দুটি ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে আসে তার। তার আর বাঁচা হয় না। অবশেষে,পৃথিবীর খোলকের মধ্যে সে পূর্বের ন্যায় নিশ্চুপ থাকে। সে আর বাঁচতে পারে নি।
----------------------------------------------------------------------------------
কবিতা ও ভাব-
একদম ঠিক আছে।
----------------------------------------------------------------------------------
ভাষা প্রয়োগ-
অনেক ভালো।
-----------------------------------------------------------------------------------
কবিতার গঠন
অনবদ্য।
-------------------------------------------------------------------------------
ছেদ যতি-
প্রয়োগ ঠিক আছে।
--------------------------------------------------------------------------------
অলঙ্কারঃ
যথার্থ। শব্দালঙ্কার খুব ভালো।
-------------------------------------------------------------------------------------
বানান-
ঠিক আছে।
------------------------------------------------------------------------------
অনুরোধ-
আপনার এ জাতীয় লেখায় আসর আগামীতে আরও সমৃদ্ধ হবে আশা করি।
-----------------------------------------------------------------------------------
******কবি আমার শুভেচ্ছা নেবেন। ভালো থাকুন।